বাইসনের তাড়ায় পালাচ্ছেন বনকর্মীরা। — নারায়ণ দে
ঊর্ধ্বশ্বাসে একদিকে ছুটছেন আলিপুরদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি। অন্যদিকে বনকর্মীরা। পড়িমড়ি করে পালাচ্ছেন গ্রামবাসীরাও। ভয়ের কারণ একটি বাইসন। শনিবার বেলা একটা নাগাদ তপসিখাতা এলাকার শালবাড়ি গ্রামের ঘটনা।
এ দিন সকাল আটটা থেকে শালবাড়ি এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছিল একটি পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী বাইসন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বনদফতর। ঘুমপাড়ানি গুলি ছুড়ে বাইসনটিকে কাবু করেন বনকর্মীরা। তারপর নাইলনের দড়ি দিয়ে বাইসনটিকে বাধা হয়। নিরাপদ ভেবে বাইসনটির কাছে চলে গিয়েছিলেন কয়েকশো গ্রামবাসী। তখনই ঘটে বিপত্তি। অভিযোগ, সঠিক ভাবে না বাধায়, নাইলনের দড়িটি পিছলে গিঁট খুলে যায়। বাইসনটি তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় উঠে দাঁড়িয়ে ছুটতে শুরু করে। হঠাৎ এই ঘটনায় প্রাণ বাঁচাতে ছুট দেন সকলেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বনকর্মী জানান, সরু লাইলনের দড়িটি দিয়ে গিট বাঁধা যাচ্ছিল না। তিনি বলেন, ‘‘বাইসনটি উঠে দাঁড়াতেই আমরা দড়িটি টেনে ধরার চেষ্টা করি। বাইসনের গায়ের জোরে এবং দড়িটি নাইলনের হওয়ায় আমাদের হাত থেকে তা ফসকে যায়।’’ তারপর বাইসনটিকে বাগে আনতে দ্বিতীয়বার ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়া হয়। তারপর স্থানীয় গ্রামবাসীরা বনকর্মীদের গাড়িতে থাকা পাটের দড়ি দিয়ে বাইসনটিকে বেঁধে ফেলে।
বন্যপ্রাণ তিন বিভাগের ডিএফও ভাস্কর জেভি জানান, ‘‘গাড়িতে বাইসন বাঁধার জন্য পাটের দড়ি থাকে। তা দিয়েই বাধতে হয়। কেন নাইলনের দড়ি ব্যবহার হয়েছিল খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ পর্যন্ত পাটের দড়ি দিয়ে বাইসনটিকে বেধে জঙ্গলে নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বনকর্মীদের দাবি, একটু পিছনে গাড়িটি থাকায়, তাড়াতাড়ি করতে নাইলনের দড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল।
যদিও এই ঘটনায় সঠিক প্রশিক্ষণ ও পরিকাঠামোর অভাবকেই দায়ী করেছেন পরিবেশপ্রেমী অমল দত্ত। নাইলনের দড়ি ব্যবহৃত হলে বন্যপ্রাণীর শরীরের ক্ষতি হতে পারে বলে জানান তিনি।
বিপদ কাটলেও চোখেমুখে সন্ত্রস্ত ভাব আলিপুরদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি শুভাশিস চাকীর। গ্রামবাসীরা বাইসনটির কাছে চলে যাওয়ায়, ভিড় সরানোর জন্য সেদিকে তাঁরা যাচ্ছিলেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ বাইসনটি উঠে দাঁড়িয়ে ছুটতে শুরু করায় প্রাণ বাঁচাতে দৌড় দিয়েছি। কোনওমতে বেঁচেছি।আলিপুরদুয়ার