বিনয় তামাং। —ফাইল চিত্র।
দিল্লি হারের পরে বিজেপির সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেছিলেন, যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দল ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসেছিল, সেগুলো রাখুক। তার পরেই তিনি উদাহরণ হিসেবে গোর্খাল্যান্ডকে কেন্দ্রশাসিত করার প্রসঙ্গ তোলেন। এই নিয়ে প্রথমে বিনয় তামাংদের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। এ দিন মৌনী ভেঙে বিনয় নিজেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্বামীকে। একই সঙ্গে এই সূত্র ধরে তিনি দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তাকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করতেও ছাড়লেন না। বিস্তা পাহাড়ে কী ধরনের স্থায়ী সমাধান চান, তা স্পষ্ট করার দাবি তুললেন বিনয়। কেন্দ্রীয় সরকার এবং পাহাড়ে বিজেপির বন্ধুদের সদিচ্ছা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মোর্চা সভাপতি। পাশাপাশি জানিয়েছেন, বিস্তা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারলে তিনি রাজ্য সরকারকে সেই বৈঠকে বসার জন্য বলবেন।
আদতে পাহাড়বাসীর কাছে বিজেপির দুমুখো নীতি তুলে ধরতেই বিনয়ের এই কৌশল বলেই দার্জিলিঙের রাজনৈতিক নেতৃত্ব মনে করছেন। তাঁরা বলেছেন, ‘‘সিএএ, এনআরসি বা এনপিআর নিয়ে পাহাড়ে বিজেপি কোণঠাসা। সেই সময় দলের একদল পাহাড়বাসীর আবেগ উস্কে দিয়ে মাটি শক্ত করতে চাইছে। আর রাজু বিস্তা পাহাড়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে সরব হয়ে নিজেকে পাহাড়বাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য করতে চাইছেন। বিনয় এই দুই জায়গায় আঘাত করতে চেয়েছেন।’’
শুক্রবার এক প্রেস বিবৃতিতে বিনয় বলেন, ‘‘আমি সুব্রহ্মণ্যম স্বামীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ২০১৫ সাল থেকে উনি এই নিয়ে ছ’বার গোর্খাদের সমর্থনে সরব হলেন। সাংসদের টুইট সোশ্যাল মিডিয়া, সংবাদমাধ্যম এবং পাহাড়ে আলোড়ন ফেলেছে। ৮ ফেব্রুয়ারির টুইটটি ৪ হাজারের উপর মানুষ রিটুইট করেছেন।’’ এর পরেই তিনি জানান, পাহাড়ে স্থায়ীভাবে সমস্যা মেটানোর জন্য সিকিম থেকে আমরা সমর্থন পেয়েছি। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে দার্জিলিঙের সাংসদ নিশ্চুপ। উনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড সক্রিয় থাকলেও এই নিয়ে কিছুই বলছেন না। এতেই বোঝা যাচ্ছে, বিজেপি দল এবং সাংসদ বিস্তার থেকে সুব্রহ্মণ্যম স্বামী পাহাড় সম্পর্কে বেশি আন্তরিক।
বিনয় জানান, ‘‘২০১৭ সালে ১০৫ দিনের ধর্মঘট তোলার জন্য বিজেপি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক দ্রুত ত্রিপাক্ষিক আলোচনা হবে বলেছিল। যা আজও হয়নি। রাজু বিস্তা বলুন, কোথায় গেল সেই বৈঠক? আর তাতে কী নিয়েই বা আলোচনা হবে? বিজেপি ভাঁওতাবিজি ছাড়া কিছুই করছে না। পাহাড়বাসী বিমল গুরুংয়ের জিটিএ বা সুবাস ঘিসিংয়ের পাবর্ত্য পরিষদের মতো আবার নতুন কিছু চায় না।’’
বিনয় বলেন, ‘‘কেন্দ্র কর্নাটকের দু’টি জনজাতিকে তফসিলি জনজাতির স্বীকৃতি দিয়ে দিল। আমরা ১১টি জনজাতির দাবি নিয়ে বসেই থাকলাম। সাংসদ বা বিজেপির বন্ধুদের দেখা পেলাম না।’’ যদিও রাত অবধি বিজেপি বা সাংসদ রাজু বিস্তার তরফে পাল্টা কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সাংসদ হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও জবাব দেননি।