ফেরা: রবিবার নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে বিনয় তামাং। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে দার্জিলিং জেলায় ফিরে একসঙ্গে মিলে পাহাড়ের উন্নয়নের কাজ করতে বিমল গুরুংকে আহ্বান করলেন বিনয় তামাং। শুক্রবার দুপুরে কলকাতায় তৃণমূলে যোগ দেন বিনয় এবং কার্শিয়াঙের দু’বারের বিধায়ক রোহিত শর্মা। রবিবার সকালে পদাতিক এক্সপ্রেস বিনয়েরা শিলিগুড়ি এসে পৌঁছন। এনজেপি দলীয় দফতরে তাঁদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই বিনয় বলেন, ‘‘বিজেপি বছরের পর বছর পাহাড়বাসীকে আলাদা রাজ্যের ললিপপ দেখিয়ে ভোটে জিতেছে। আর তা হবে না। উন্নয়নের কাজই আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। সেই সঙ্গে দলকেও আরও শক্তিশালী করতে হবে। বিমল গুরুং তৃণমূলের জোটসঙ্গী হিসাবেই কাজ করছেন। আমি বলব, আসুন আমরা একসঙ্গে উন্নয়নের কাজে শামিল হই।’’ তবে একটি বারও বিনয় অনীত থাপার নাম মুখ নেননি। আর গুরুং শিবির বলেছে, তারা তৃণমূলের পাশেই আছে।
সূত্রের খবর, পাহাড়ের তৃণমূলের নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে গুরুংয়ের সম্পর্ক এখন ভাল। বিধানসভার ভোটের আগে এক দফায় পাহাড়ের দলের সভানেত্রী শান্তা ছেত্রী গুরুং শিবিরের প্রার্থীদের পাশে থাকার কথা বলেন। দলের তরফে অবশ্য তাঁকে সতর্কও করা হয়। অনীত থাপা ও বিনয় তামাং তখন একসঙ্গেই ছিলেন। তাঁরা শান্তার মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। যা গুরুং অনুগামীরা ভাল চোখে দেখেননি। এখন তৃণমূলে যোগ দিলেই তাই বিনয় গুরুং-কে বার্তা দিয়ে ‘এক ঢিলে দুটি পাখি’ মারতে চেয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রথমত, অনীত থাপার বিরুদ্ধে পাহাড়ে জোট ভারী করতে বিনয় এসব বলছেন। দ্বিতীয়ত, নিজের তৃতীয় অধ্যায় তৃণমূল নেতা হিসাবে শুরু করে গুরুংয়ের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক বজায় রেখে ভবিষ্যতে এগোতে চাইছেন। কিছুদিন আগে এক দফায় তিনি গুরুংয়ের সঙ্গে দেখাও করে এসেছিলেন। বিশেষ করে ভবিষ্যতে পাহাড়ে পুরসভা, পঞ্চায়েত ভোট ছাড়াও জিটিএ ভোট হতে পারে। সেখানে ভোটে লড়তে তাঁর কোনও আপত্তি নেই বলেও বিনয় এ দিন মন্তব্য করেন। তিনি বলেছেন, ‘‘দল আমাকে যে ভাবে যে দায়িত্বে কাজ করাবে তাই করব। ভোটে দাঁড়াতে বললে লড়াই করব।’’
২০১৭ সাল অবধি গুরুং, বিনয় এবং অনীত একসঙ্গেই ছিলেন। পরে পাহাড়ের বন্ধ তুলে গুরুংকে ছেড়ে অনীত, বিনয় রাজ্যের পাশে দাঁড়ান। সেই থেকেই দু’জনের সঙ্গে গুরুংয়ের দূরত্ব বাড়ে।
জুলাইয়ে অনীতকে ছেড়ে এক চলা শুরু করেন বিনয়। দুই জনের মধ্যে দূরত্ব বেড়েছে। এই সময় প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা খুলে পাহাড়ে জোরদার ভাবে এগিয়েছেন অনীত। রাজ্য এবং জেলা তৃণমূলের একটা বড় অংশ তাঁর পাশে আছেন। সেখানে পাল্টা গুরুংকে নিয়ে বিনয় দলভারী করতে চাইছেন বলেই পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন। আগামী পুরসভা ভোটে গোর্খা-প্রধান এলাকায় প্রচারে নামার কথাও বলেছেন বিনয়।