দিল্লিতে জিটিএ বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না তাঁরা, জানিয়ে দিলেন বিনয় তামাং। —ফাইল চিত্র
রোশন গিরি, মন ঘিসিংদের পরে এ দিন বিনয় তামাংরাও জানিয়ে দিলেন, ৭ অগস্ট দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডাকা জিটিএ বৈঠকে যাচ্ছেন না তাঁরা। ফলে অমিত শাহের মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকটি আপাতত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। যদিও বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, বৈঠক নিয়ে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি জারি হতে পারে। তাতে সব সংশয় দূর করে পাহাড় নিয়ে আলোচনার বিষয়টিই স্পষ্ট করে দেওয়া হতে পারে।
মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাং এ দিন বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারে থাকাকালীন কংগ্রেস বিজেপির থেকে অনেক ভাল ছিল। তিন দফায় পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের জন্য আন্দোলন হয়েছে। ৮০-এর দশকে কংগ্রেসের সরকার পার্বত্য পরিষদ গড়ে দিয়েছিল। ২০১১ সালের পর কংগ্রেস সরকারই ক্ষমতা বাড়িয়ে জিটিএ দিয়েছে। প্রায় ৬০০ কোটি টাকা সেই সময়ই এসেছিল। ধাপে ধাপে স্বশাসিত পাহাড়ের উত্তরণ তো হচ্ছিল। বিজেপি ২০০৯ সাল থেকে পরপর তিনবার পাহাড় থেকে সাংসদ পেয়েছে। পাহাড় সমস্যা, ১১ জনজাতির স্বীকৃতি, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটা দাবিও তারা মানেনি।’’
বিনয় একই সঙ্গে জানিয়ে দেন, ‘‘আমরা দিল্লি যাচ্ছি না। কোনওভাবে জিটিএ-র কেউ এই বৈঠকে যোগ দেবেন না। আলাদা রাজ্য বা রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধান নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলেই আমরা আছি। আর জিটিএ এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে দরকার নেই, আমরা রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে নেব।’’
এ দিন সকালে একই ভাবে বৈঠকে যোগ দেওয়ার প্রশ্ন নেই বলে জানিয়ে দেন জিটিএ প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান অনীত থাপাও। তিনি বলেন, ‘‘জিটিএ-র প্রশাসনিক থেকে উন্নয়নমূলক সব আলোচনা আমরা রাজ্যের সঙ্গে করব। আসলে মানুষকে বোকা বানানোর চক্রান্ত ফের শুরু হয়েছে।’’
মোর্চা নেতাদের অভিযোগ, ২০২১ সালের ভোটের কথা ভেবে বিজেপি ফের সক্রিয় হয়েছে। প্রথমে বিমলপন্থীদের ডেকে অমিত শাহ এক রকম কথা বলেছেন। তার পরে দিল্লিতে মন ঘিসিংকে আলাদা করে ডেকে বৈঠক করা হয়। শেষে, মন্ত্রকের চিঠি দিয়ে বিনয় শিবিরের লোকজনকে দিল্লি ডাকা হয়। পুরো বিভাজনের রাজনীতি করে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা চলছে বলে তাঁদের দাবি।
বিনয় বলেছেন, ‘‘পাহাড়ের সব দলকে এই খেলা বুঝতে হবে। প্রয়োজনে রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধানের জন্য সবাইকে একসঙ্গে চলতে হবে। সেখানে আন্দোলন হলেও আগের মতো বন্ধ বা ধংসাত্মক নয়। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তা হবে। তাতে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কেউ নেতৃত্ব দিলেও আমাদের অসুবিধা নেই। আর প্রয়োজন ভারত-নেপাল মৈত্রী চুক্তির সংশোধন হোক। তা না হলে কোনও দিনই পাহাড়ে রাজনৈতিক স্থায়ী সমাধান বার হবে না।’’
বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা অবশ্য বলেছেন, ‘‘দিল্লিতে আলোচলা চলছে। সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে হবে।’’