বিনয় তামাং।
পাহাড়ে প্রচার শেষ হতেই ‘টাকার খেলার’ আশঙ্কা করছে বিরোধী শিবির। তাদের দাবি, ভোটের ১০৮ ঘণ্টা আগে থেকেই পাহাড়ের শাসক প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার ঘনিষ্ঠদের বাড়ি, ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, সরকারি আধিকারিকদের গাড়ি, বাইক তল্লাশি করা হোক। কড়া নজরদারি বাড়িয়ে তল্লাশি অভিযানের জন্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে লিখিত অনুরোধ করেছেন জিটিএ সদস্য বিনয় তামাং। কমিশন থেকে জেলা প্রশাসন এবং রাজভবনেও তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। একই ভাবে পাহাড়ের ভোটের দুর্নীতির বন্ধে আবেদন করেছেন হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডও। তিনি প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বিনয়ের অভিযোগ, ‘‘পাহাড়ে বড় অঙ্কের টাকা ছড়ানোর পরিকল্পনার কথা শুনতে পারছি। গত কয়েকটি ভোটেও টাকার ব্যবহার হয়েছে। তাই আগাম প্রশাসন, কমিশন থেকে রাজভবনকে বিষয়টি জানালাম। এখনই নজরদারি বাড়িয়ে তল্লাশি শুরু করা দরকার।’’ তাঁর দাবি, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতানেত্রী, সক্রিয় কর্মী, জিটিএ-র নির্বাচিত ও মনোনীত সদস্য, জিটিএ-র আধিকারিকদের একাংশ, ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদার, বিভিন্ন সরবরাহকারীরা এই কাজে জড়িয়ে। এখনই সন্দেহজনকদের বাড়ি, গাড়িতে তল্লাশি প্রয়োজন।
দু’দিন আগেই দার্জিলিঙের আরিয়া চা বাগানে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে টাকা বিলির অভিযোগ ওঠে। হামরো পার্টি দার্জিলিং সদর থানায় বুধবার এই নিয়ে লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে। দু’জনের মধ্যে এক জন গ্রাম পঞ্চায়েত, আর এক জন পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী। হামরো পার্টির সভাপতি অজয় বলেন, ‘‘প্রজাতান্ত্রিক নেতারা ভোটের দুর্নীতি শুরু করে দিয়েছে। টাকা বিলির ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) আমরা দেখছি। আরও এমন আশঙ্কা রয়েছে। তাই কমিশনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছি।’’
পাহাড়ের বিরোধীরা জানান, ভোটের আগের রাত অবধি টাকার খেলার অভিযোগ পাহাড়, সমতল সর্বত্র রয়েছে। তবে পাহাড়ে ভোট প্রচারের শেষ লগ্ন থেকে টাকা ঢোকা শুরু করে বলে অভিযোগ। বিশেষ করে সমতলের বিভিন্ন মহল, স্তর থেকে দাবিমত টাকা নেতাদের বলা ঠিকানায় পৌঁছয়। তার পরে, তা নির্দিষ্ট হাত ঘুরে ভোটের এলাকায় ঢুকতে থাকে। সন্দেহ কম করতে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ভবন, হোটেল, রিসর্ট থেকে টাকা বিলি হয়। গ্রামে টাকার সঙ্গে অনেক সময়ই খাবার, শীতপোশাক, মদের বোতলও বিলি হয় বলে অভিযোগ। কোথাও কোথাও ভোটদাতারা নির্দিষ্ট দোকান থেকে মালপত্র নিয়ে নেন। সেখানে টাকা মিটিয়ে দেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা বা নেত্রী। বিনয়ের দাবি, ‘‘এ বার বিরাট গ্রামীণ এলাকায় ভোট। তাই বড় অঙ্কের টাকা পাহাড়ে ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে।’’
তবে পাহাড়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার প্রধান অনীত থাপা বলেছেন, ‘‘সব উত্তর ১১ জুলাই দেব।’’