দার্জিলিং জিটিএ দফতরে দাবিপত্র জমা দিচ্ছেন বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডেরা৷ নিজস্ব চিত্র
দার্জিলিং পাহাড়ে আলাদা রাজ্যের দাবির কথা কেন্দ্র ও রাজ্যকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল জিটিএ-র সভায়। ভোট হওযার পরে, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথম জিটিএ সভা হয়। চার মাস পরে, মঙ্গলবার জিটিএ চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত থাপাকে চিঠি দিয়ে সে প্রক্রিয়া কত দূর, কেন্দ্র বা রাজ্য কী বলল, তা জানতে চাইলেন বিনয় তামাং, অজয় এডওয়ার্ডেরা। শাসক-বিরোধী আট জন জিটিএ সদস্য অনীতকে চিঠি দিয়ে গত তিন বছরের জিটিএ-র আয়-ব্যয়ের হিসাবও প্রকাশ্যে আনার দাবি তোলেন।
বিনয় বলেন, ‘‘জিটিএ সভা নিয়ে আমাদের কিছু প্রশ্ন রয়েছে। আমরা আট জন সদস্য পাহাড়ের সার্বিক দাবির কথা তুলে ধরেছি। জিটিএ সভায় আলাদা রাজ্যের আলোচনা প্রক্রিয়া চালু রাখার কথা বলেছি। সে দাবির এখন কী পরিস্থিতি তা জানতে চেয়েছি। এর সঙ্গে বাজেট, তহবিল নিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন রয়েছে।’’ তিনি দাবি করেন, বেলা ১২টা অবধি লালকুঠি বা জিটিএ শহরের দফতরে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, পাহাড়ের কী উন্নয়ন, পরিস্থিতি চলছে। পরে, অবশ্য দাবিপত্র জমা দেওয়া হয়। তবে বিনয়-অজয়দের দাবিপত্র নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে চাননি চিফ এগজ়িকিউটিভ অনীত। তিনি বলেন, ‘‘সব বিষয়ই জিটিএ সভার বিষয়। বাইরে মাইকে চিৎকার না করে সময় মতো সভায় সব উত্তর দেব।’’
বিনয় নিজে তৃণমূল থেকে বেরিয়ে এসেছেন বলে দাবি করলেও জিটিএতে তৃণমূল সদস্য হিসাবে আছেন। যদিও দাবিপত্রে তিনি নিজেকে কোনও দলের বলে উল্লেখ করেননি। দলের রাজ্য নেতৃত্বও অবশ্য এখনও বিনয়কে নিয়ে কোনও মন্তব্য বা নির্দেশিকা জারি করেনি। পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, সমস্ত দিক থেকে অনীতকে চাপে রাখতেই অজয়-বিনয়েরা ময়দানে নেমে পড়েছেন। পুরসভা নিয়ে আদালতে মামলা, জিটিএ সভা নিয়ে নানা দাবিপত্র প্রকাশ্যে তুলে ধরা আর নিয়মিত ক্যাপিটাল হলে সভা চলছে।
জিটিএ সদস্য এবং হামরো পার্টির সভাপতি অজয় বলেন, ‘‘আইনি অনুসারে তিন মাস পর পর সভা করতে হয়। চার মাস পার হয়ে এল। বিধায়ক, সাংসদ, পুরপ্রধানদের সভায় ডাকার আইন রয়েছে।তা ডাকা হয়েছে কি না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।’’
জিটিএতে শাসক প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বিরোধী আট সদস্য দাবিপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। সেখানে ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল অবধি জিটিএ-তে কেন্দ্র, রাজ্যের বরাদ্দের অঙ্ক, হিসাবের পরিমাণ জানতে চাওয়া হয়েছে। একই ভাবে আগামী বাজেট নিয়ে জিটিএ কী ঠিক করছে, কী ধরনের প্রস্তাব রাখা হবে তা ওই সদস্যেরা জানতে চেয়েছেন। বিনয় বলেন, ‘‘আমি জিটিএ প্রধান থাকার সময় সব সদস্যদের মতামত নিয়ে বাজেট তৈরি হয়েছে। এখন মতামতের বিষয়ই নেই দেখছি। আমরাও পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য মতামত, প্রস্তাব দিতে পারি।’’