তাবড় নেতাদের উপস্থিতিত সত্ত্বেও বিজনবাড়ি কলেজের ভোটে দলের ছাত্র সংগঠন মুখ থুবড়ে পড়ায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্দরেই উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে।
তা নিয়ে দলের শীর্ষনেতারাও যথেষ্ট শঙ্কিত সেটা স্পষ্ট করে দিলেন খোদ বিমল গুরুঙ্গ। রবিবার কালিম্পঙে এক দলীয় সভায় মোর্চা সভাপতি বলেছেন, ‘‘অত ভয়ের কিছু নেই। আমি ঘরের ছেলে। পাহাড়ের মানুষ আমার সঙ্গেই থাকবেন। কয়েকজনকে টাকা-পয়সা দিয়ে কেউ কাছে টানতেই পারেন। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত পাহাড়ে যে কোনও ভোটে গোর্খাল্যান্ডপন্থীরাই জেতেন। আগামী দিনেও জিতবেন।’’
মোর্চার অন্দরের খবর, বিজনবাড়ি কলেজে ১১ আসনের মধ্যে ১০টিতে টিএমসিপি জেতার পরে পাহাড় জুড়ে যে মোর্চা বিরোধী বাতাস ক্রমশ প্রবল হচ্ছে, সেটা আঁচ করে দলের একাংশ একান্তে শীর্ষ নেতাদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
মোর্চার এক নেতা জানান, তাঁদের মনোবল জোগাতেই গুরুঙ্গ ভয় না পাওয়ার বার্তা দিতে চেয়েছেন। যা শোনার পরে পাহাড়ের তৃণমূলের মুখপাত্র বিন্নি শর্মা কিংবা সভাপতি রাজেন মুখিয়া একযোগে বলেছেন, ‘‘যে তাস দেখিয়ে দিনের পর দিন উন্নয়নের টাকা অপচয় হচ্ছে তা মানুষ ধরে ফেলেছেন। সেই তাসের ঘর যে এবার হুডমুড়িয়ে বাঙবে সেটা বিজনবাড়ির তরুণ প্রজন্ম বুঝিয়ে দিয়েছেন। আগামী দিনে পুরসভা জিটিএ ভোটেও তা টের পাবে মোর্চা।’’
গত সপ্তাহে বিজনবাড়ি কলেজে ছাত্র সংসদের ভোটে মোর্চার ছাত্র সংগঠন মুখ থুবড়ে পড়েছে। সেখানে ভোটের দিন মোর্চার প্রায় ২০ জন প্রথম ও মাঝারি সারির নেতা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, একদা গুরুঙ্গে ঘাঁটি হিসেবে মোর্চার ভিতরে পরিচিত বিজনবাড়ির ছাত্রছাত্রীরা কেন মুখ ফেরালেন, তা নিয়ে দলেই নানা কানাঘুষো চলছে। বিশেষত, দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নিয়েই বেশি আলোচনা চলছে।
এই অবস্থায় আজ, সোমবার ফের ৫ দিনের সফরে উত্তরবঙ্গে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথম দিন জলপাইগুড়িতে থাকলেও বাকি চারদিন থাকবেন দার্জিলিঙের সুকনায়। সেখানে থেকেই মিরিক মহকুমার উদ্বোধন ও পাহাড় নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। আরও অনেক উন্নয়ন প্রকল্পের সূচনা ও ঘোষণাও হবে। তা নিয়ে এত দিন নানা কটাক্ষ করলেও এদিন গুরুঙ্গ বলেছেন, ‘‘মিরিক মহকুমা গঠনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। এটা হলে ভালই হবে।’’
পাহাড়ের ধারণা, রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজের প্রস্তাবকে বাধ্য হয়েই স্বাগত জানান গুরুঙ্গ।