জিটিএ চিফ হওয়ার পর গাড়িটি কেনেন গুরুঙ্গ। পাহাড়ের দুর্গম গ্রামে দেহরক্ষীদের নিয়ে গুরুঙ্গ ঘুরে বেড়া
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের আগে ক্রমশ নজরদারি বাড়ছে দার্জিলিং পাহাড়ে। দু’দিন আগে গ্রেফতার হয়েছিলেন বিমল গুরুঙ্গের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী এবং গাড়ির চালক। এ বার পাহাড়ি জঙ্গল, পাথুরে দুর্গম রাস্তায় ঘোরাফেরার জন্য গুরুঙ্গের একটি গাড়ি উদ্ধার করল দার্জিলিং সদর থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার লিম্বুবস্তির চা বাগান লাগোয়া জঙ্গলে খড়, ঘাস দিয়ে ঢাকা অবস্থায় গাড়িটি উদ্ধার হয়েছে। ‘পোলারিস রেঞ্জার’ নামের ওই গাড়ির মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা। জিটিএ চিফ হওয়ার পর গাড়িটি কেনেন গুরুঙ্গ। পাহাড়ের দুর্গম গ্রামে দেহরক্ষীদের নিয়ে গুরুঙ্গ ঘুরে বেড়াতেন। ‘চিফের রেঞ্জার বাইক’ বলেই বিভিন্ন গ্রামে গাড়িটি পরিচিত ছিল।
এর মধ্যেই গুরুঙ্গ ঘনিষ্ঠ গঙ্গাবাহাদুর থামি নামের এক ব্যক্তিকে পাতলেবাস থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার তাকে শিলিগুড়ি আদালতে তুলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠান হয়েছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, পাহাড়ের পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হতেই ফেরারদের একাংশ পাহাড়ে ঘোরাফেরা শুরু করে। সেই সূত্রেই গুরুঙ্গের গাড়ির চালক সিদ্ধান্ত বিশ্বকর্মাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতার করে আরও সাত জনকে ধরা হয়। এ বার গাড়িটি উদ্ধার হল।
পুলিশ সূত্রের খবর, ছোট গাড়িটি চা বাগান লাগোয়া জঙ্গলের ঢালে গর্ত খুঁড়ে ঢুকিয়ে রাখা ছিল। সেটির উপর দিয়ে এমনভাবে খড়, ঘাস ঢাকা ছিল তাতে বাইরে থেকে বোঝার উপাই ছিল না। জুন মাসে পাতলেবাস থেকে গা ঢাকা দেওয়ার পর গুরুঙ্গের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ কয়েকজন অনুগামী সেটিকে জঙ্গলে নিয়ে লুকিয়ে রেখেছিলেন। উত্তরবঙ্গের ওই গাড়ির কোনও ডিলারের খোঁজ মেলেনি। উত্তর পূর্বাঞ্চলের গুয়াহাটি এবং ডিমাপুরে গাড়িটির ডিলার রয়েছে। সেখান থেকে ট্রাকে করে গাড়িটি পাহাড়ে এসেছিল বলে অনুমান।
বিদেশি-বাহন: জঙ্গলের ঢালে খড় ঘাসে ঢাকা ছিল গুরুঙ্গের এই গা়ড়িটি
৮৭৫-১০০০ সিসি’র গাড়িটিতে দু’টি সিলিন্ডার ইঞ্জিন রয়েছে। লোহা এবং অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি গাড়ির গা পোক্ত। ফোর হুইল ড্রাইভের গাড়িটি ফোর স্ট্রোকের। প্রায় ৭০ হর্সপাওয়ারের গাড়িটির গতিবেগ ঘন্টায় ৫০-৬০ মাইলের মতো। গাড়িটিকে অনেকেই পাতলেবাসের গুরুঙ্গের বাড়ির ছাউনির ভিতরে থাকতেও দেখেছেন। বিশেষ করে পাথুরে পথ, মরভূমি এবং জঙ্গল, নদীর রাস্তায় এই গাড়ি ব্যবহার করা হয়। অফিসারেরা জানান, উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর ক্যাম্পে এমন গাড়ির দেখা মেলে। এ ছাড়া সেনা এবং আধা সেনার অফিসারেরা বিভিন্ন দুর্গম এলাকায় ব্যবহার করেন। গাড়িটি কী উদ্দেশ্যে লুকিয়ে রাখা ছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, গঙ্গাবাহাদুরের বিরুদ্ধে গোলমাল, বাসে অগ্নিসংযোগের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।