অসহায় পরিবার দিশাহীন ভাবে হাতড়ে বেড়াচ্ছে অভিশপ্ত স্থান। নিজস্ব চিত্র।
ময়নাগুড়ির ট্রেন দুর্ঘটনায় এখনও নিখোঁজ কারও পরিবারের সদস্য, আবার কারও খোয়া গিয়েছে মেয়ের বিয়ের জন্য তৈরি করা সোনার গহনা। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই পড়িমরি করে দৌড় দোমহনির দুর্ঘটনাস্থলে। অসহায় পরিবার দিশাহীন ভাবে হাতড়ে বেড়াচ্ছে অভিশপ্ত স্থান।
গত বৃহস্পতিবার মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির দোহমনি এলাকায়। তাতে প্রাণ হারান ৯ জন। আহত ৪৩ জনেরও বেশি। আহতদের ভর্তি করা হয়েছিল ময়নাগুড়ি গ্ৰামীণ হাসপাতাল, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আহতরা অনেকেই ছাড়া পেয়েছেন হাসপাতাল থেকে। আর ছাড়া পেয়েই ছুটেছেন দুর্ঘটনাস্থলের দিকে। অনেকেরই জামা কাপড়, টাকা পয়সা এমন কি মেয়ের বিয়ের জন্য তৈরি করানো সোনার গয়না পর্যন্ত হারিয়ে গিয়েছে।
সেই ট্রেনের যাত্রী আহত কেশবালা বর্মণ তার ভাইপো-সহ ২২ জন বিকানির থেকে কোচবিহার ফিরছিলেন। সবাই ছিলেন ‘এস-১৩’ কামরায়। দুর্ঘটনায় তিনি ও মেয়ে পিঙ্কি গুরুতর ভাবে আহত হন। তাঁদের সে দিন উদ্ধার করে গ্রামবাসী এবং প্রশাসনের লোকেরা ভর্তি করেছিল হাসপাতালে। জ্ঞান ফিরতেই পরিজনদের খোঁজ শুরু করেন কেশবালা। সকলে সুস্থ থাকলেও, একজনকে এখনও খুজে পাননি তাঁরা। বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছেন, এমন কি দুর্ঘটনাস্থলের পাশে অস্থায়ী ক্যাম্পে এসেও তন্ন তন্ন করে খোঁজ করেন তারা। তার ১৭ বছর বয়সী ভাইপো সম্রাট এবং সঙ্গে থাকা মালপত্রের জন্য দুশ্চিন্তায় কেশবালারা।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার দোমুখা এলাকার বাসিন্দা কেশবালা বলেন, ‘‘আমরা ২২ জন ট্রেনে ফিরছিলাম। একজন নিখোঁজ। তাঁকে খুঁজতে এখানে এসেছি। আমরা হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম। ছুটি পেয়েই ঘটনাস্থলে এসেছি খোঁজার জন্য।’’
নিরাশার সুরে তিনি বলেন, ‘‘জানি না, সে বেঁচে আছে কি না। তবে তাঁর তো খোঁজ আমাদের নিতেই হবে। তাই এখানে এসেছি। আধিকারিকরা কোনও তথ্য দিতে পারেননি।’’