— প্রতীকী চিত্র।
এক দিকে, পরিকাঠামোর সমস্যা, অন্য দিকে থানায় দায়ের হওয়া মামলার সংখ্যা হাতেগোনা। মূলত অফিসারদের কাজ টুরিজ়ম প্রকল্পের নজরদারি থেকে ট্র্যাফিকের। আর প্রায়ই ‘ভিআইপি ডিউটি’ করা। এই অবস্থায় মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘স্বপ্নের প্রকল্প’ মেগা টুরিজ়ম প্রকল্পের গজলডোবা বা ভোরের আলো থেকে শিলিগুড়ি পুলিশের পূর্ণাঙ্গ পুলিশ থানাটি সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
রাজ্য পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহেই নবান্নের শীর্ষ স্তরের সঙ্গে আলোচনার পরে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ‘ভোরের আলো’ থানা আগামী কি ছুদিনের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মেগা টুরিজ়ম হাব ‘ভোরের আলো’য় আগের মতো একটি পুলিশ ফাঁড়ি চালু করা হবে। তা গজলডোবা পুলিশ ফাঁড়ি হিসাবে পরিচিত হতে পারে। আর নতুন ‘ভোরের আলো’ থানা চালু হবে বর্তমান থানার জায়গা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের আমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে। তাতে আমবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িটি আপাতত বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আলোচনা করা হচ্ছে।
শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বুধবার বলেন, ‘‘ভোরের আলো থানাটি সরিয়ে আরও ভাল পরিকাঠামোর জন্য আমরা আমবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন এলাকায় থানা চালুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে গিয়েছে। দ্রুত দিনক্ষণ ঘোষণা করে দেওয়া হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১২ সালের অগস্টে দার্জিলিং জেলা পুলিশ থেকে সমতলের ছ’টি থানা নিয়ে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট চালু হয়। ৬৪০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে কমিশনারেটে কাজ শুরু করে। তার পরে দফায় দফায় মহিলা থানা, এনজেপি ফাঁড়ি থেকে থানা, সাইবার থানা এবং সর্বশেষ ‘ভোরের আলো’ থানা তৈরি করা হয়। গজলডোবায় পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং এলাকার নজরদারির কথা ভেবে থানার কথা বলা হয়। সেই সময় এনজেপি থানার আওতায় থাকা মিলনপল্লি পুলিশ ফাঁড়িকে ‘ভোরের আলো’ থানায় রূপান্তরিত করা হয়।
পরিকাঠামো কিছু বাড়ানো হলেও ওসি-র ঘর, ডিউটি অফিসারের বসার এলাকা পরে তৈরি হয়। লকআপ এবং অফিসারদের থাকার ‘ঠিকঠাক’ ব্যবস্থা অবশ্য এখনও নেই। থানার নীচে নবদিশা বলে একটি শিশুদের স্কুলও চলে। তা শিক্ষিত মহিলা সিভিকেরা সেখানে শিশুদের পড়ান। মোট ১৫০.৫ বর্গ কিলোমিটার থানার একটিই ফাঁড়ি আমবাড়ি ফাঁড়ি। এরই এলাকা ১০৮.৫ বর্গকিলোমিটার। থানার আওতায় জনসংখ্যা এক লক্ষের মত। এর ৭০ শতাংশ আমবাড়ি এলাকার। তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতও ফাঁড়ির এলাকার মধ্যে রয়েছে।
‘ভোরের আলো’ থানায় ১৪ জনের মতো অফিসার, ১০ জন কনস্টেবলের বাইরে সিভিক ভলান্টিয়ার আছেন। ফাঁড়িতে সংখ্যাটা কম। পুলিশ সূত্রের খবর, গত নভেম্বরে এই থানায় ১৫টি মতো মামলা হয়েছে। এর সবই প্রায় আমবাড়ি ফাঁড়ি এলাকার ঘটনা। সেখানে ‘ভোরের আলো’ এলাকায় দুর্ঘটনা, বচসা ছাড়া, মামলার সংখ্যা খুবই কম হয়েছে। কয়েকমাস আগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জমি উদ্ধারের সময় কিছু মামলা হয়েছিল।
সেই জায়গা থেকে হাইওয়ের পাশে, জনবসতিপূর্ণ, তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত ঘেরা এবং অভিযোগের সংখ্যার নিরিখে এগিয়ে থাকা আমবাড়িতেই নতুন ‘ভোরের আলো’ থানা চালু হতে চলেছে।