জঙ্গলে ঘেরা গোপন ডেরা থেকে জীবনের ভিডিয়ো-বার্তা রবিবার।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এ বার অভিষেককেও ‘টার্গেট’ করলেন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের প্রধান জীবন সিংহ। রবিবার তাঁর একটি ভিডিয়ো-বার্তা ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তিনি একটি জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁকে ঘিরে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল হাতে দাঁড়িয়ে কয়েক জন। জীবন বার্তায় বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উসকানিমূলক কথা বলছেন। বাঙালি ও অবাঙালিদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছে। এই বিভেদ ভয়ঙ্কর হবে। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি হবে। এই ষড়যন্ত্রের বিরোধিতা করছি আমি।” তৃণমূল নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “কোচ-কামতাপুরের কিছু টিএমসি নেতা কলকাতার দালালি করছে। তোমাদের এখানে থাকার অধিকার নেই। আমরা থাকতেও দেব না।’’
দিন কয়েক আগেও জীবন বলেন, কেএলও’র সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ কোচকে বাংলাদেশ থেকে রাজ্য পুলিশ গ্রেফতার করে লুকিয়ে রেখেছে। গোয়েন্দা সূত্র থেকে অবশ্য জানা গিয়েছে, কৈলাশকে গ্রেফতার করেছে এনআইএ। তাঁকে ভারতে আনা হয়েছে বলেও সূত্রের খবর। গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়েই কেন্দ্রের সঙ্গে শান্তি আলোচনা অনেকটা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে কেএলও। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই মায়ানমার থেকে নাগাল্যান্ডে পৌঁছনোর কথা রয়েছে জীবনের। সেখান থেকে তিনি দিল্লি যাবেন। জীবন সিংহ আজ বিশেষ সূত্রে আনন্দবাজারকে জানান, তাঁর নির্দেশেই সংগঠনের ভাইস চেয়ারম্যান হর্ষবর্ধন বর্মণ, উপ-সেনাধ্যক্ষ মালখান সিংহ ও অন্য শীর্ষ নেতা অন্তেশ্বর সিংহরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বাদ দিয়েই কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমববঙ্গ সরকার ভয় পেয়ে কেএলও নেতা টম অধিকারীকে গৃহবন্দি করেছে। কিন্তু বাংলার কোনও চাপের সামনেই মাথা না নুইয়ে দ্রুত শান্তি চুক্তি সম্পন্ন করতে কেন্দ্রকে অনুরোধ জানিয়েছেন জীবন। কেএলও সূত্রে জানানো হয়েছে, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার উদ্যোগে হর্ষবর্ধন, মালখান, অন্তেশ্বরেরা অসমে রয়েছেন। তাঁরা জীবনকে স্বাগত জানাতে নাগাল্যান্ড যেতে তৈরি।
এ দিকে তৃণমূলের অভিযোগ, মমতা ও অভিষেককে নিশানা করে জীবনের এই হুমকির পিছনে রয়েছে বিজেপিই। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এ সব কথার কোনও গুরুত্ব নেই। আসলে কেএলও’র পিছনে বিজেপি রয়েছে। তারা যেমন ভাবে বলে দিচ্ছে, তেমন ভাবেই ভিডিয়ো বার্তা আসছে। আমরা মানুষের সঙ্গে আছি। মানুষই এ সবের জবাব দেবে।” বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় তৃণমূলের অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, “আমরা সর্বভারতীয় দল। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছি। পশ্চিমবঙ্গে বিরোধী। কেএলও জঙ্গি সংগঠন। তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কথা আসবে কেন? উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা, নিয়ে আমরা আওয়াজ তুলবই।”