শিলিগুড়ি থানা সংলগ্ন, নির্মিয়মান বহুতল সংলগ্ন এলাকায় জমে রয়েছে জল। ছবি: স্বরূপ সরকার
শিলিগুড়ি শহরে পুজোর সময় থেকে বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। এ বার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সে রোগে কাবু পুলিশও। পুলিশ সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি থানা এলাকায় গত এক সপ্তাহে একের পরে এক পুলিশ আধিকারিক এবং কর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। শিলিগুড়ি থানায় ইতিমধ্যে এক জন মহিলা-সহ তিন জন, পানিটাঙ্কি ফাঁড়িতে দু’জন পুলিশ অফিসার-কর্মী ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির ওসি মৃন্ময় ঘোষকে নার্সিংহোমে ভর্তি করাতে হয়েছিল। এর বাইরেও অন্তত শহরের পাঁচ জন পুলিশ অফিসার, কর্মী জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বরের ওষুধ-সহ বিশ্রাম নিয়ে অনেকে ঠিক হয়েছেন। এ ব্যাপারে সোমবার শিলিগুড়়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকরের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘‘প্রতিটি থানা-সহ পুলিশের সব দফতরে নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গি যাতে না ছড়ায় তা দেখতে হবে।’’
শিলিগুড়ি থানার পাশে একটি নির্মীয়মাণ ভবনের জমা জল রয়েছে। পানিট্যাঙ্কি ফাঁড়ির পাশে রয়েছে নোংরা আবর্জনা। একই নোংরা আবর্জনার ছবি নিয়মিত দেখা যায় খালপাড়া ফাঁড়ির সামনেও। এই ফাঁড়িতেও গত বছর কর্মরত অফিসারেরা ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন, তেমনই তথ্য রয়েছে। শহরের বাইরের থানা, ফাঁড়ির কি পরিস্থিতি তা কমিশনারেট থেকে খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। কমিশনারেটের অফিসারেরা জানান, পুলিশ থানা এবং ফাঁড়ির আশপাশের এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার করা জরুরি। জমা জল বা নোংরা আবর্জনাই মশার আঁতুড়ঘর। সব সময় সে সব সাফাই হয় না বলে অভিযোগ।
দুর্গাপুজোর ছুটির পরে এ দিন পুরসভা খুলেছে। এ দিনই ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক করেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব। সেখানে স্বাস্থ্য এবং প্রশাসনিক কর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের শুল্ক দফতরের একটি গুদামে ডেঙ্গি মশার লার্ভা চিন্তায় ফেলছে পুরসভাকে। পরিত্যক্ত গাড়ি থেকে বিভিন্ন সরঞ্জামে জমা জলে মশার উপদ্রব বাড়ছে। একই ভাবে পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘শহরের পরিস্থিতির উপর নজর নিয়মিত রাখা হচ্ছে। ২৭ নম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের গুদামে ডেঙ্গির লার্ভা মিলেছে। দু’জন আক্রান্তও এলাকায়। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’ পুরসভার সূত্রে খবর, এ বছর পুরসভার ৪৭টি ওয়ার্ডে ৮৪ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত। তার মধ্যে সংযোজিত জলপাইগুড়িতে জেলার ওয়ার্ডগুলিতে ৩০ জন আক্রান্ত। নির্মীয়মাণ ভবনে জঙ্গল সাফাই, জল পরিষ্কারের খরচ জমির মালিকের কাছে পুরসভা আদায় করবে বলে ঠিক হয়েছে।
সহ প্রতিবেদন: নীতেশ বর্মণ