পাশাপাশি: আশায়। নিজস্ব চিত্র
হাত-হাতুড়ি একই ফ্লেক্সে। কংগ্রেস নেতার দলীয় কার্যালয়ে হাজির সিপিএমের নেতা-প্রার্থীরা। সিপিএম প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরাও। তৃণমূলকে ঠেকাতে বিধানসভা মডেলেই আস্থা রেখে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচার শুরু করেছেন বাম-কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা। শুধু প্রচারই নয়, রয়েছে আসন ভাগাভাগিও। মোথাবাড়ি থানার রথবাড়ি পঞ্চায়েতে দু’দলের যৌথ প্রচার চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে জেলা জুড়ে। বিধানসভা ভোটের মতো পঞ্চায়েতেও রথবাড়িতে সাফল্য মিলবে বলে আশা বাম-কংগ্রেস নেতাদের। দু’দলের একজোট হয়ে মাঠে নামাকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
বিধানসভা নির্বাচনে মালদহে আসন ভাগাভাগি করে লড়াই করেছিল বাম-কংগ্রেস। গ্রাম-গঞ্জের দেওয়ালে দেওয়ালে এখনও মোছেনি হাতের উপরে হাতুড়ি চিহ্ন। বাম-কংগ্রেসের সমঝোতা রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়লেও সফল হয়েছিল মালদহে। জেলার ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিতেই জয়ী হয়েছিলেন বাম-কংগ্রেসের প্রার্থীরা। আর একটি আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। তবে বিধানসভা নির্বাচনে খাতা খুলতেই পারেনি তৃণমূল। এমনকী, বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতার কাছে হারতে হয়েছিল রাজ্যের দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্রকেও। ফলে বিধানসভা মডেলকে এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাতিয়ার করেছে বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব।
সিপিএমের এক নেতা বলেন, “তৃণমূলকে ঠেকাতে ভোটের শেষ সময়ে বিরোধীদের যে প্রার্থী বেশি শক্তিশালী তাঁকেই ভোট দেওয়ার আহ্বান জানানো হবে।” শুধু জেলা পরিষদ নয়, পঞ্চায়েত স্তরেও আসন সমঝোতা করে লড়াই করছে দু’দল।
জানা গিয়েছে রথবাড়ি পঞ্চায়েতে, মোট আসন ১৯টি। তার মধ্যে কংগ্রেস লড়ছে ১৬টিতে এবং সিপিএম লড়ছে মাত্র তিনটি আসনে। ওই পঞ্চায়েতে বাম-কংগ্রেসের মধ্যে বরাবরই লড়াই হয়েছে। সত্তরের দশক থেকে কংগ্রেস এবং বামেরা বোর্ড গঠন করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ছিল বামেরা। তার পর থেকে টানা ৩৫ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস। ফলে দু’দল একসঙ্গে হয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে রথবাড়িতে। শুধু আসন ভাগভাগি নয়, চলছে একসঙ্গে প্রচার। অঞ্চল জুড়েই ফ্লেক্স ঝোলানো হয়েছে দু’দলের সমর্থনে। কোনও ফ্লেক্সে সিপিএমের হাতুড়ি চিহ্ন বড় হলে ছোট হাত। আবার কোথাও হাত বড় হলে ছোট হাতুড়ি চিহ্ন।
কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি হাসিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, “২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল গায়ের জোরে পঞ্চায়েত দখলের চেষ্টা করেছিল। সেই সময় আমরা রুখে দিয়েছিলাম। এ বার আরও সন্ত্রাসের আশঙ্কা রয়েছে। তাই তৃণমূলকে ঠেকাতে সিপিএমের সঙ্গে আমরা যৌথ ভাবে লড়াই করছি।” তাঁর সুরেই সুর মিলিয়ে লোকাল কমিটির সদস্য মীরবানু আলম বলেন, “বিধানসভা ভোটের মতো পঞ্চায়েতেও রথবাড়িতে তৃণমূলকে শূন্য করে দেব।” মোথাবাড়ির তৃণমূলের পর্যবেক্ষক কল্যাণ মল্লিক বলেন, “বাম কংগ্রেসের অনৈতিক জোটে মানুষ আর ভুলবে না। এ বার সেই জোট ভেঙে দিয়ে ফুটবে ঘাসফুল।”