গোঁজ নিয়ে জেরবার খোদ মন্ত্রী। গোজ কাঁটা এতটাই বিঁধেছে যে দফায় দফায় বৈঠক করে সুরাহা মেলেনি।
এমনই ছবি মন্ত্রী গোলাম রব্বানির খাসতালুকে। এক একটা সংসদে তিন-চার জন গোঁজ প্রার্থী দের নিয়ে প্রবল বিড়ম্বনায় শাসক তৃণমূল। কোথাও মন্ত্রীর অনুগামী তো আবার কোথাও ব্লক নেতাদের অনুগামী। কোথাও আবার জেলা নেতার অনুগামী দাঁড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের গোঁজ প্রার্থী হয়ে। বিরক্ত হয়ে মন্ত্রী বলছেন, ‘‘দল যাকে প্রার্থী করবে তাঁকে না মানলে ভোটের পর কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
গোয়ালপোখর ১ পঞ্চায়েত সমিতির আসন সংখ্যা ৪১। সেখানে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছেন ৫৮ জন। আর নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন ১১১ জন। এই নির্দলদের বেশিরভাগই শাসক দলের। সেটাই মাথাব্যথা বাড়িয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ক্ষেত্রেও একই ছবি। ২০৪টি আসনে ২৪৪ জন তৃণমূলের হয়ে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। নির্দল হয়ে জমা দিয়েছেন ৩৮৮ জন। এরও বেশিরভাগটাই শাসক দলের বিক্ষুব্ধ। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমস্যার সমাধানে বারবার মন্ত্রী বৈঠক করে সমাধান সূত্র বার করতে পারেননি। হাইকোর্টের রায়ে নিয়ে কিছুটা হাতে সময় পেলেও তা কাজে লাগাসনো যাবে কি না তা নিয়ে সন্দিহান শাসক দলের নেতারাই।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে বসলে কেউ জানাচ্ছেন তাঁর প্রার্থী পছন্দ নয়। কেউ আবার অভিযোগ তুলছেন দলের নির্দিষ্ট করা প্রার্থী কাজ করেননি বলে তাঁকে মানুষ ভোট দেবেন না। কোনও কোনও বিক্ষুব্ধ প্রার্থী তো প্রার্থী সম্বন্ধে স্পষ্ট বলেই দিচ্ছেন, ‘‘ওর তো একটাও ভোট নেই। কীভাবে জিতবে? তাই আমি নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছি।’’ কেউ বলছেন আমাকে জেলার নেতা বলেছেন। কেউ আবার বলছেন তাঁকে বলেছেন ব্লক নেতা। এ সব শুনে মন্ত্রী কার্যত বিরক্ত বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। সবক’টি আসনের হাল নিয়ে মন্ত্রী প্রবল ক্ষুব্ধও। তাই তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘দলীয় ঘোষিত প্রার্থী ছাড়া যদি কেউ প্রত্যাহার না করেন তাহলে ভোটের পর দলীয় ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এত গোঁজ নিয়ে কার্যত ‘বেসামাল’ জেলার নেতারাও। গোয়ালপোখর ব্লক তৃণমূল সভাপতি গোলাম রসুল অবশ্য ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, ‘‘কিছু আসনে ডামি প্রার্থী দাঁড় করানো হয়েছে। কোনও প্রার্থী যদি পরীক্ষা পর্বে বাতিল হয়ে যান তাই এই ব্যবস্থা। সেখানে দলীয় নির্দেশ মেনে প্রত্যাহার করে নেবে। যে সব আসনে সমস্যা হচ্ছে তা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।’’
জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘গোঁজ বলে কেউ থাকবে না। দলের প্রতীকে লড়াই করবে সেই আমাদের প্রার্থী। বাকিদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকার। ভোটের লড়াইয়ে থাকলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’’