প্রচারে: কলেজপাড়ায় ভোটের প্রচারে দীপা দাশমুন্সি। নিজস্ব চিত্র
সেই ‘প্রিয়দা’-র কথাই ভোটের মুখে ফিরে ফিরে আসছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার ‘উন্নয়নের কাণ্ডারী’ বলা হতো কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সিকে। সোমবার সন্ধেয় ইসলামপুরের গুনজুরিয়াতে এ দিন জেলায় প্রথম নির্বাচনী সভা করলেন সেই ‘প্রিয়দা’-র সহধর্মিণী রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাসমুন্সি।
দীপা এ দিন জানান, প্রিয়রঞ্জনের স্বপ্ন ছিল এইমস হাসপাতাল। সেই স্বপ্ন পূরণ করতে কংগ্রেস প্রাথীদের জয়ী করার আহ্বান জানান তিনি। এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘‘আসলে মোদী আর দিদির আঁতাত চলছে। তাই বাংলায় বিজেপির বাড়বাড়ন্ত।’’ গোটা জেলা জুড়ে তৃণমূল সন্ত্রাস করছে, এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাঁরা কংগ্রেস করেন তাঁরা ছেড়ে যাননি। রায়গঞ্জে লিয়াকত আলিকে প্রাণের ভয় দেখিয়ে নাম প্রত্যাহার করানো হয়েছে। কিন্তু তিনি দলের সঙ্গে আছেন।’’
এ দিন তিনি সভা শুরুর আগে ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় মিছিল করেন। আর সেই মিছিলে বাম প্রার্থীরা সামিল ছিলেন। সেখানে কংগ্রেস পতাকা ছাড়া সিপিএম পতাকা ছিল। সভা শেষে দীপা দাসমুন্সি জানান, ‘‘জেলায় বেশ কিছু আসনে সিপিএমের সঙ্গে জোট করা হয়েছে। স্থানীয় নেতৃত্ব তা ঠিক করেছেন। আমরা তা সমর্থন করেছি। যেখানে কংগ্রেসের জেতার সম্ভাবনা আছে সেখানে সিপিএম তাদের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য লড়ছেন। অন্য দিকে সিপিএম যেখানে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেখানে কংগ্রেস সমর্থন করছে।’’ এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের জেরে যেসমস্ত আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি সেখানে আমরা নির্দল বা বাম প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়েছি।’’
দীপা ভোট পর্যন্ত জেলায় আছেন। নিজেই ভোট দিয়ে যাবেন। টানা জেলায় প্রচারের কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। এ দিনের অন্যদের মধ্যে ভাষণ দেন জেলা কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মুজ্জাফর হোসেন। এদিন বক্তাদের মুখে সেই বার বার প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি কথা তুলে ধরেন। এদিকে সিপিএম কংগ্রেস জোট নিয়ে সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিকাশ দাস বলেন, ‘‘কিছু কিছু আসনে আমাদের জোট হয়েছে।’’ তৃণমুল জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘আমারা তো বলছি বার বার বিরোধীরা ঘট পাকিয়ে জোট করেছে।এই জোট অশুভ জোট। এই জোটকে মানুষ মেনে নেবেন না।’’
ইসলামপুরের ব্লক সভাপতি মুজফফর হুসেনের দাবি, ‘‘ইসলামপুরের ক্ষেত্রে আমাদের জোট হয়েছে তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। সেখানে মিলেই প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।’’ তবে ইসলামপুর চোপড়া দুই এলাকাতে গন্ডগোল প্রবণ এলাকার বিরোধীতে থাকা নেতা কর্মীদের একাংশের দাবি, শুধু ইসলামপুরেই নয় শাসক দলের ভয়েই অনেক এলাকাতে প্রার্থীরা দাঁড়াতে চাইছেন না। কাজেই যে এলাকাতে যার শক্তি বেশি, সেখানে তারা যদি প্রার্থী দিয়ে থাকে তাদের সমর্থন করছেন। সিপিএম এর উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদক অপূর্ব পাল বলেন, ‘‘ইসলামপুরের যদি এই ভাবে প্রচার করে থাকে, তা সত্যিই খুব ভাল ব্যাপার।’’