wildlife news

খাবারের খোঁজে কি ওরা নেমে আসছে ডুয়ার্সে

পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে যে, সন্ধ্যার পরে বেরনো বন্ধ করে দেন বাসিন্দারা। ভালুকের পায়ের ছাপ মেলে বহু জায়গায়। বনকর্মীরাও গত বছরই প্রথম চাক্ষুষ করেন বুনো ভালুক।

Advertisement

সব্যসাচী ঘোষ

মালবাজার শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২২ ০৮:১১
Share:

ভালুকটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন বনকর্মীরা। শুক্রবার, কালচিনি ব্লকের দক্ষিণ লতাবাড়ি গ্রাম থেকে। নিজস্ব চিত্র

ফের ভালুক নামতে শুরু করেছে ডুয়ার্সে। চলতি সপ্তাহেই তিন বার পাহাড় থেকে নেমে এসেছে ভালুক। আর তিনটি ঘটনাই আলিপুরদুয়ার জেলায়। প্রথম ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবারে বক্সায়। সেখানে শাবক-সহ ভালুককে সমতলে নামতে দেখেন বনকর্মী এবং স্থানীয়েরা। দ্বিতীয় বার রাঙ্গালিবাজনার কাছে, গোপালপুর বাগানে গত বৃহস্পতিবার ভালুক ঢুকে পড়ে। এর পরে, শুক্রবার কালচিনি ব্লকের লতাবাড়িতে চাণ্ডব চালালো দু’টি ভালুক। একটি শুয়োরকে মেরে ফেলে ভালুক, এমনকি, ভালুকের কামড়ে জখম এক গ্রামবাসীও।

Advertisement

গত বছর শীতের শুরুতে পাহাড় থেকে ডুয়ার্সের সমতলে প্রথম নেমে আসে ভালুকের দল। পর পর ভালুকের হানায় নাজেহাল হয়ে পড়েন স্থানীয়েরা। গত বছর ২৪ নভেম্বর প্রথম একটি ভালুক ঢুকে পড়ে মেটেলি চা বাগানে। কাছে যাওয়ায়, স্থানীয় এক কিশোরকে ভালুকটি মেরে ফেলে। পরে, স্থানীয়েরা ভালুকটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ। ওই এলাকায় আগে কেউ ভালুক দেখেননি। বন দফতরের রেকর্ডেও কিছু মেলেনি। এর পর থেকে ভালুক হানা দেয় বিভিন্ন এলাকায়। মালবাজার পুর এলাকায় অনুষ্ঠান বাড়িতেও ঢুকে পড়ে ভালুক শাবক। সেটিকে বার করে আনা হয়। ভালুকের আতঙ্কে মাঝপথে বন্ধ হয় জলপাইগুড়ি জেলা বইমেলা। নাগরাকাটার গ্রাসমোড়েও ভালুকের দেখা মেলে। মালবাজার-ডামডিমের মাঝে গুডহোপ চা বাগান ও সামরিক ছাউনিতেও ভালুক দেখা যায়। মধ্য ডুয়ার্সে মেলে ভালুকের মৃতদেহও।

পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে যে, সন্ধ্যার পরে বেরনো বন্ধ করে দেন বাসিন্দারা। ভালুকের পায়ের ছাপ মেলে বহু জায়গায়। বনকর্মীরাও গত বছরই প্রথম চাক্ষুষ করেন বুনো ভালুক। তাই তাদের সঙ্গে মোকাবিলা কী ভাবে করতে হবে, কোনও জবাব ছিল না তাঁদের কাছে। জবাব নেই এ বছরও। গরুমারা বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও অংশু যাদব বলেন, “জরুরি ভিত্তিতে ভালুকের সঙ্গে সংঘাত এড়াতে সচেতনতার কাজ শুরু করব। সকলকে সতর্ক থাকতেও বলব।”

Advertisement

সূত্রের খবর, যে প্রজাতির ভালুক হিমালয় সন্নিহিত এলাকা থেকে ডুয়ার্সে নামছে, তার নাম এশিয়াটিক ব্ল্যাক বেয়ার। কাশ্মীরে এই প্রজাতি রয়েছে। সেখানে কয়েক বছর আগে শীতের আগে, নিচু লোকালয়ে ভালুক ঢুকে পড়ে। কেন প্রাক্‌-শীতে আগমন? সূত্রের খবর, ভালুক প্রবল শীতের তিন মাস ঘুমিয়ে কাটায়। তাই শীতের আগে তারা বেশি করে খাবার খুঁজে খেতে থাকে। উঁচু এলাকায় খাবারের অভাব তাদের নিচু জায়গায় নিয়ে আসছে বলে অনুমান। পরিবেশবিদ শ্যমাপ্রসাদ পাণ্ডে বলেন, “জলবায়ুর বদল ও মানুষের নানা কাজের জন্যে উপরে খাবারের সঙ্কট হচ্ছে। তাতেই ভালুক নেমে আসছে। এ ভাবে চললে ধরে নিতে হবে, এটা ওদের স্বাভাবিক পরিব্রাজনেই যুক্ত হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement