সিকিম খুলল ও পার বাংলার কাছে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১২
Share:

ছাংগু লেকের পথে। ফাইল চিত্র।

ভারতে ঘোরার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নাগরিকদের একটি দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে এ দেশের সিকিম, অরুণাচলপ্রদেশ, লাদাখের মতো পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘোরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা ছিল। সরকারিস্তরে প্রতিনিধিদের কোনও সময় বিশেষ অনুমতি শুধুমাত্র দেওয়া হত। তবে সাধারণ পর্যটকেরা তা পেতেন না।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, এই নিয়ম শিথিল করছে কেন্দ্র। গত মঙ্গলবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা ওই ঘোষণা করেছেন। দিল্লি থেকেও নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। বুধবার সরকারি ছুটি থাকায় নির্দেশিকা দিল্লি থেকে বিভিন্ন স্তরে এখনও পৌঁছায়নি। আগামী ১-২ দিনের মধ্যে তা চলে

আসবে বলেই মনে করা হচ্ছে। নতুন নিয়মে ভিসার আবেদনপত্রের সঙ্গে নতুন একটি আবেদনপত্র পূরণ করে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনের অনুমতি নিতে হবে। তার ভিত্তিতে সেখান থেকেই সিকিম বা অরুণাচলে আসার ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

বাংলাদেশের ভারতীয় হাই কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বৈধ ভিসার ছাড়াও অতিরিক্ত রুট অনুমোদনের সব আবেদন আজ, বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশের সব ক’টি ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রে গ্রহণ করা হবে। নতুন করে কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, বগুড়া, নোয়াখালি, ঠাকুরগাঁও এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আবেদন কেন্দ্র খোলা হচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, স্বাধীনতার কিছু দিন পরেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দিয়েছিল, নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তান, মায়ানমার, চিনের নাগরিকদের সিকিম এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলে প্রবেশ নিষেধ। সেই থেকেই নিয়মটি চলে আসছে।

তার পরে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্ম। কিন্তু বহু সংগঠন, সংস্থার তরফে দু’দেশের সরকারের কাছে বিবেচনার আবেদন জানানোর পরেও নিয়ম বদলায়নি।

এখন হঠাৎ এই নিয়ম পরিবর্তন করা হল কেন? নয়াদিল্লি সূত্রে বলা হচ্ছে, সামনেই বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন। তার আগে পড়শি রাষ্ট্রের প্রতি সৌজন্যের বার্তা দিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে দু’দেশের কূটনীতিকদের একাংশ। তাঁদের কারও কারও বক্তব্য, এর মাধ্যমে বোঝানো হল, হাসিনা সরকারের প্রতি দিল্লির আস্থা অটুট।

পর্যটন মহল অবশ্য খুশি। সিকিম সরকারের পরামর্শদাতা (পর্যটন) রাজ বসু বলেন, ‘‘গত এক দশক ধরে আমরা বিভিন্ন মহলে আবেদন করেছিলাম। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান হল। বরফে ঢাকা সিকিম বা অরুণাচলের তাওয়াং থেকে ইটানগরে এ বারে নির্দিধায়

যেতে পারেন বাংলাদেশের নাগরিকরা। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে কথাও বলেছি।’’ একই ভাবে ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের অব বাংলাদেশের সভাপতি তৌফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘আমরা অত্যন্ত খুশি। প্রতি বছর বাংলাদেশে পর্যটকেরা ভারতে গেলেও ওই জায়গাগুলিতে যেতে পারতেন না বলে আফশোস ছিল। এ বার সেই সমস্যা মিটল।’’

এত দিন বাংলাদেশি পর্যটকদের একটি বড় অংশ উত্তরবঙ্গে আসতেন। দার্জিলিং, কালিম্পং, ডুয়ার্স ঘুরে তাঁরা ফিরে যেতেন। পর্যটন দফতরের হিসেবে, এ রাজ্যে প্রতি বছর দেড় লক্ষের বেশি পর্যটক ঘুরতে আসেন। তার একটি বড় অংশ উত্তরবঙ্গে আসেন।

রাজ্যের হিমালয়ান হসপিট্যালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সদস্য সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘নতুন নিয়ম জানার পরে বুধবার থেকেই বাংলাদেশের নানা জায়গার পর্যটন ব্যবসায়ীরা

এই বিষয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement