প্রতীকী ছবি
বাংলাদেশ থেকে এ দেশে চিকিৎসা করাতে এসে এক বৃদ্ধের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর নাম আরশাদ আলি (৬৩)। বাড়ি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গি থানার ইলুয়াটুলিতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষিজীবী আরশাদের খুড়তুতো ভাই সাহেব আলির বাড়ি করণদিঘি থানার আলতাপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জিনাইকুড়ায়। সেখানেই এসেছিলেন আরশাদ। সোমবার বিকেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিজনেরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার হাসপাতালের মর্গে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে। এ দিকে, মৃতের পরিবারের কোনও সদস্যের পাসপোর্ট না থাকায় তাঁরা ওই বৃদ্ধের মৃত্যুর খবর পেয়েও এ দেশে আসতে পারেননি। সেই কারণে তাঁরা দেহ বাংলাদেশের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারছেন না।
পুলিশ জানিয়েছে, আরশাদের স্ত্রী মহারিনা খাতুন গৃহবধূ। তাঁদের এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। আরশাদের পৈতৃক বাড়ি করণদিঘি থানার আলতাপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের জিনাইকুড়ায়। ১৯৭২ সালে দেশভাগের আগে আরশাদ তাঁর পরিবারের কয়েক জনের সঙ্গে বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলায় চলে যান। গত প্রায় ছ’মাস ধরে তিনি পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন। বাংলাদেশে অনেক চিকিৎসা হলেও রোগ সারেনি। সেই পরিস্থিতিতে ভারতে চিকিৎসা করানোর জন্য ১২ জানুয়ারি আরশাদ পাসপোর্ট ও ভিসা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে বালুরঘাটে পৌঁছন। পরে পৌঁছন করণদিঘির জিনাইকুড়ায় খুড়তুতো ভাই সাহেব আলির বাড়িতে।
সাহেব জানিয়েছেন, ১৪ জানুয়ারি তাঁরা আরশাদকে বিহারের কিসানগঞ্জ এলাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসার পরে ২০ জানুয়ারি হাসপাতাল থেকে তিনি ছুটি পান। কিন্তু সোমবার বিকেলে আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন আরশাদ। হাসপাতালে নিয়ে ওয়ার পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
সাহেব বলেন, ‘‘দাদার মৃত্যুর খবর পেয়েও পাসপোর্ট না থাকায় তাঁর স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা এ দেশে আসতে পারছেন না। তাই দাদার মৃতদেহও বাংলাদেশে নিয়ে যেতে পারছেন না। আমরা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের দাদার মৃতদেহ বাংলাদেশের বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছি।’’ তিনি জানান, তবে শেষ পর্যন্ত মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব না হলে, করণদিঘির জিনাইকুড়া এলাকায় তা কবর দেওয়া হবে।
উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি কবিতা বর্মণের বক্তব্য, সরকারি নিয়ম মেনে কী ভাবে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ বাংলাদেশে পাঠানো হবে পুলিশ ও প্রশাসন তা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করবে।