ব্যালট পেপার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেল মালদহের চাঁচল স্টেডিয়ামের মাঠে। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে মানুষকেই প্রার্থী নির্বাচনের ভার দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে জেলায় জেলায় এখন গোপন ব্যালট বাক্সে ভোট নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অভিষেকের সভার পর সেই গোপন ব্যালট পেপার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে মালদহের চাঁচল স্টেডিয়ামের মাঠে। এ নিয়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কটাক্ষ করছে বিরোধীরা।
অভিষেকের সভার পর গত ৩ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী বাছার ভোট হয়েছিল চাঁচল স্টেডিয়ামে। মোট ৮৭টি অঞ্চলে প্রার্থী বাছাই হয় গোপন ব্যালটে। ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মানুষ পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের ভোট দেন। বুধবার সেই ব্যালট পড়ে থাকতে দেখা গেল খোলা ময়দানে। গত বুধবার ওই স্টেডিয়ামে রাত্রিবাস করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে সেখানে প্রাতর্ভ্রমণে গিয়ে কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা দেখতে পান স্টেডিয়ামের মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ব্যালট পেপার। শুরু হয় শোরগোল। এ নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বেরই একাংশেরই অভিযোগ, ‘‘গোপন ব্যালট যদি মাঠে গড়াগড়ি খায় তবে ভোটের কী প্রয়োজন?’’
তৃণমূল নেতৃত্ব আবার পুরো বিষয়টির দায় চাপিয়েছে অন্যদের উপর। যেমন রাজ্য তৃণমূলের সহ-সভাপতি কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই কাজগুলি এজেন্সি (বেসরকারি সংস্থা) করে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন। সভা করেছেন। মানুষের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি চলেও গিয়েছেন। কিন্তু দায়িত্বপ্রাপ্ত এজেন্সির দায়িত্ব পরের বিষয়গুলো দেখার।’’ কাগজ পড়ে থাকার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি দেখিনি কী কাগজ পড়ে আছে। কোনও ব্যালট আছে কি না। না দেখে কোনও কিছু বলব না।’’
আর এ নিয়ে মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে এমন রাজকীয় ব্যবস্থার পরেও সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার কোনও মূল্য নেই তৃণমূলের কাছে। এই ঘটনা তারই প্রকৃত উদাহরণ।’’