নব-অধ্যায়: অনুষ্ঠানে তিন নেতা। নিজস্ব চিত্র।
রাজনৈতিক লড়াই, দূরত্ব সরিয়ে রেখে হামরো পার্টি, প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা আগেই একসঙ্গে নেপালি ভাষা দিবস পালনের ঘোষণা করেছিলেন। নতুন করে তাঁদের পাশে এলেন জন আন্দোলন পার্টির সভাপতি হরকা বাহাদুর ছেত্রীও। শনিবার দার্জিলিঙের গোর্খারঙ্গ মঞ্চের অনুষ্ঠানে অনীত থাপা, অজয় এডওয়ার্ডদের সঙ্গে দেখা গেল প্রাক্তন কালিম্পঙের বিধায়ককে। বক্তব্য রাখতে উঠে হরকাবাহাদুর বললেন, ‘‘অনীত ও অজয় এক নতুন দার্জিলিঙের সূচনা করেছেন। রাজনৈতিক মতামত, লড়াই আমাদের আলাদা হতেই পারে। কিন্তু জাতি, এলাকার জন্য সবাইকে একজোট হওয়াটাই জরুরি। ওরা এটা করে দেখাল।’’
একসময় বিমল গুরুঙের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হরকাবাহাদুর, অনীতেরা যখন দার্জিলিং শহর জুড়ে একসঙ্গে অনুষ্ঠান করেন, তখন তাকভর এলাকায় নিজের মত একাই ভাষা দিবস পালন করেন গুরুং। নতুন দার্জিলিঙের আবহ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে অনীত বলেছেন, ‘‘ভাষা দিবস আমাদের জাতির কাছে গর্বের, ঐতিহ্যের। এখানে কোনও রাজনৈতিক দলের কিছু ছিল না। তাই এই দাবিদাওয়া এত বছর আগে আমরা সফল ভাবে পেয়েছি। এটাকে মাথায় রেখেই এগোতে হবে।’’
১৯৯২ সালে চার দশকের আন্দোলনের পর নেপালি ভাষাকে ভারতীয় সংবিধানের অষ্টম তফসিলে অর্ন্তভুক্ত করা হয়। সরকারিভাবে স্বীকৃতি পায় নেপালি ভাষা। স্কুল, কলেজে প়়ড়াশোনা ছাড়াও পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে জায়গা পেয়েছে নেপালি। একে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য গত একমাস ধরে পাহাড়ে নানা পরিকল্পনা হয়। সেখানে অনীতের নেতৃত্বাধীন জিটিএ পরিকল্পনা তৈরি করে। তেমনিই, অজয় এডওয়ার্ডদের দার্জিলিং পুরসভা নিজেদের মতো করে চিন্তাভাবনা করতে থাকে। একসময় অনীত অজয়কে একসঙ্গে অনুষ্ঠান করার প্রস্তাব দেন। জিটিএ এবং পুরসভা মিলে যৌথভাবে পরিকল্পনা তৈরি করে।
শনিবার মিছিল, আলোচনা সভা, গুণিজন সংবর্ধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খাদ্য উৎসব কোনও কিছুই বাকি ছিল না। এরমধ্যে রঙ্গমঞ্চ অনুষ্ঠান শুরু হতেই হাজির হন হরকা বাহাদুরের মতো পাহাড়ের নেতারা। দেখা যায়, আনমোল প্রসাদের মত গুরুং-ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন জনমুক্তি মোর্চার অন্যতম শীর্ষ নেতাকেও। অনীত, অজয়দের সঙ্গে সকলকেই আলাদা কথাও বলতে দেখা গিয়েছে। পাহাড়ের নেতারা জানান, একদলীয় শাসন, এক নায়কতন্ত্রের দিন পাহাড়ে শেষ, তা বোঝাই যাচ্ছে। পাহাড়ের রাজনীতি বাদে সকল বিষয়ে একজোট হওয়ার সময় তৈরি হয়েছে। নেপালি ভাষা দিবস তাই দেখাল।