খুদে: মায়ের সঙ্গে ‘লাকি’। ২৯ মার্চ দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় জন্ম হয়েছে এই টাকিনটির। নিজস্ব চিত্র
বাবা ও মা জার্মান। বার্লিনের টায়ার পার্ক চিড়িয়াখানার বাসিন্দা। গত বছরের জানুয়ারি মাসে বিমানে কলকাতা হয়ে দুই জোড়া দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় এসেছে। এক জোড়ার সন্তান আড়াই মাসের 'লাকি' কিন্ত এখন পুরোপুরি ভারতীয়। ভুটানের জাতীয় পশু হিসেবে স্বীকৃত টাকিনের প্রথমবার ঘেরাটোপের মধ্যে জন্ম হয়েছে।
লকডাউন চলাকালীন পদ্মজা নায়ডু হিমালয়ান জ্যুলজিক্যাল পার্ক বা দার্জিলিং চিড়িয়াখানায় ২৯ মার্চ টাকিন জন্ম। এই দুঃসময়ে জন্মে তরতরিয়ে বেড়ে ওঠায় বনকর্মীরা তার নাম রেখেছেন লাকি। এখন প্রায় ৩৫ কেজি ওজনের লাকি পুরোপুরি সুস্থ। ওর সঙ্গেই রাজ্যে প্রথমবার জন্মেছে দু’টি ওয়াইল্ড ক্যাট, ব্লু শিপ এবং বেশ কয়েকটি হিমালয়ান থর। তাদের নিয়ে দার্জিলিং বন দফতর, চিড়িয়াখানার কর্মীরা এখন ব্যস্ত দিনভর। আপাতত সরকারি নিষেধাজ্ঞায় বন্ধ দার্জিলিং চিড়িয়াখানা, শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্ক। সরকারি সূত্রের খবর, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ১ জুলাই থেকে এগুলি খুলতে পারে। আর তখন লাকিকে প্রথমবার আনা হতে পারে দর্শকদের সামনে। দার্জিলিং চিড়িয়াখানার অধিকর্তা রাজেন্দ্র জাখর বলেন, ‘‘এটা দার্জিলিং চিড়িয়াখানার কাছে একটি গর্বের বিষয়। হিমালয়ের উচ্চতর অংশে টাকিন থাকে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটানে থাকলেও আমাদের উঁচু এলাকাগুলিতে টাকিন দেখা যায়নি।’’ তিনি জানান, লাকি ভালভাবে বড় হচ্ছে।
দার্জিলিঙের চিড়িয়াখানায় রেড পান্ডা, তুষারচিতা, টিবেটিয়ান উইলফ, ব্লুশিপ, হিমালয়ান থরের মতো বিলুপ্তপ্রায় প্রানীদের ক্যাপটিভ ব্রিডিং বা কৃত্রিম প্রজনন হয়। এ বারে এই তালিকায় জুড়ল টাকিন। বড় ছাগল বা ভেড়ার সমগোত্রের এই প্রাণীটি শান্ত স্বভাবের। দার্জিলিং চিড়িয়াখানাটি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় থাকা চিড়িয়াখানা। তাই সেন্ট্রাল জু অথারিটি টাকিন নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করতেই দার্জিলিংকে এর নতুন বাসস্থান হিসাবে বেছে নিয়েছে। সূ্ত্রের খবর, চিড়িয়াখানাগুলি ১ জুলাই থেকে খোলা যায় কিনা, তা নিয়ে তোড়জোর চলছে। করোনা সামলাতে একগুচ্ছ পদক্ষেপও করা হবে। মূল গেট এবং টিকিট কাউন্টারের কর্মীদের জন্য পিপিই, পর্যটক বা দর্শকদের জন্য থার্মাল স্ক্রিনিং, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, চিড়িয়াখানা সানিটাইজ করা রয়েছে এই পদক্ষেপে। আমেরিকায় বাঘের দেহে করোনা সংক্রমণ মেলায় কেন্দ্রীয় জু অথরিটি আরও সতর্ক। বিশেষ করে দুই জায়গাতেই নানান শাবক রয়েছে। বেঙ্গল সাফারি পার্কের অধিকর্তা ধর্মদেব রাই বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ এলে আমরা সতর্কবার্তা মেনেই পার্ক খুলব।’’