—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
আর্ন্তজাতিক সীমান্তের কারণে বন্যপ্রাণীদের চলাচল যেন বাধা না পায়। ভুটানের সঙ্গে বঙ্গের সীমান্তবর্তী জেলার সমন্বয় বৈঠকে উঠে এল এই প্রস্তাব। জলপাইগুড়ির চালসায় একটি অভিজাত রিসর্টে বৃহস্পতিবার দু’দিনের বৈঠক শুরু হয়েছে। ভারত এবং ভুটানের জঙ্গল এবং জঙ্গল লাগোয়া এলাকা দিয়ে হাতি-সহ একাধিক বন্যপ্রাণী করিডর রয়েছে। নির্দিষ্ট করিডরে নিয়মিত দু’দেশের জঙ্গলের মধ্যে বুনো হাতিদের যাতায়াত থাকে। হাতি ছাড়াও গন্ডার, বাইসন এবং চিতাবাঘেরও যাতায়াত রয়েছে। দু’দেশের সীমান্তে চোরাচালান রুখতে এবং নিরাপত্তার কারণে কোথাও-কোথাও অস্থায়ী ‘বাধা’ তৈরি করা হয়েছে। কোথাও বা নির্মাণ হয়েছে। জঙ্গলের ভিতরে এবং লাগোয়া বন্যপ্রাণী করিডরে এমন কোনও বাধা থাকলে, তা সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে।
এ দিকে, বানারহাটের সঙ্গে সামসি রেলপথে যুক্ত হচ্ছে। সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে রেলের কেউ না থাকলেও রেলপথের যৌথ সমীক্ষা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া, ভুটান থেকে আসা নদীগুলি প্রতিবার ডুয়ার্সে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি করে। হড়পা বান ডাকে। সেগুলি প্রতিরোধের উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। উঠেছে ডলোমাইট প্রসঙ্গও। যদিও জেলা প্রশাসন অথবা ভুটানের তরফে সংবাদমাধ্যমে কোনও বিবৃতি এ দিন দেওয়া হয়নি।
ভুটান এবং পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত জেলাগুলির মধ্যে নিয়মিত সমন্বয় বৈঠক হয়। এ দিন থেকে ২৬তম বৈঠক শুরু হয়েছে। জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার অনুপ কুমার আগরওয়াল, উত্তরবঙ্গের আইজি রাজেশ কুমার যাদব, বন বিভাগের উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল রাজেশ কুমার-সহ জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের ছিলেন বৈঠকে। ভুটানের ২২ জনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন ভুটানের ডিজি দাসো পাসং দর্জি, ভুটানের নিরাপত্তা বিষয়ক আধিকারিক কর্মা দর্জি।
সূত্রের খবর, এ দিনের বৈঠকে ভুটান থেকে আসা নদীগুলির মুখে ডলোমাইট না রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ডুয়ার্সে ডলোমাইটের কারণে ভোগান্তি দীর্ঘদিনের। মধ্য এবং পূর্ব ডুয়ার্সেই এর প্রভাব বেশি। বানারহাট, বীরপাড়া, মাদারিহাট, কালচিনি ব্লকের নদীগুলিতে ডলোমাইটের গুঁড়ো ভেসে এসে চা বাগান-সহ ডুয়ার্সের পরিবেশে প্রভাব ফেলে। সেই সঙ্গে, নদীতে বালি-পাথর জমা হয়ে বন্যার প্রবণতাও দেখা যায়। সূত্রের দাবি, এ নিয়ে ভূটানের তরফে আশ্বাস মিললেও, এ দিনের বৈঠকের পরেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, এমন আশা প্রশাসনিক কর্তারা করছেন না।
উত্তরবঙ্গে বন্যা প্রতিরোধে ভুটানে বৃষ্টির যাতে ‘রিয়েল টাইম’ পাওয়া যায়, তা নিয়েও দু পক্ষ অনেকটাই সম্মত হয়েছেন বলে দাবি। দু’দেশের সীমান্তে হাতির হানায় ফসল নষ্ট আটকানোর উপায় বের করতেও আলোচনা চলছে। সমন্বয় বৈঠকে সশস্ত্র সীমা বলের (এসএসবি) আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। আজ শুক্রবার প্রতিনিধি দল কিছু এলাকা পরিদর্শনও করতে পারে বলে জানা গিয়েছে।