অশোক ভট্টাচার্য। —ফাইল চিত্র
পুর এলাকায় ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলা স্বাস্থ্য দফতর সমন্বয় রাখছে না বলে আগেও অভিযোগ তুলেছিলেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। ফের শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফরের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি। রবিবার পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে তিনি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের ভূমিকা নিয়ে সরব হন। মেয়র বলেন, ‘‘সিএমওএইচ তো দূরের কথা একজন স্বাস্থ্যকর্মীও জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত একদিন ফোন করে শিলিগুড়ি ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে পুর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেননি। একদিনও কেউ পুরসভার ডাকা বৈঠকে আসেননি।’’
এই বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করলে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘এনিয়ে কোনও কিছু বলার নেই।’’ তাঁর দফতর খেকে জানানো হয়েছে, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং টিম রয়েছে। তারা নিয়মিত বৈঠক করে। পুরসভার প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়।
এ দিন মেয়র প্রশ্ন তুলেছেন, জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের কাজ নিয়ে আলোচনার জন্য মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কেন পুরসভায় এলেন না। রাজ্যের অন্য জায়গায় ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য দফতর পদক্ষেপ নিলেও শিলিগুড়ি বাদ কেন সেই প্রশ্ন তুলেছেন মেয়র। রাজ্য সরকারে বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি পুরসভাকে অসহযোগিতার অভিযোগও করেছেন তিনি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে বলা হয়েছে, শিলিগুড়ি পুর এলাকায় ডেঙ্গি রোগীর সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে। ডেঙ্গিতে ৬ জনের মৃত্যুর অভিযোগও উঠেছে। নিকাশি সাফাই না হওয়া, নর্দমায় আবর্জনা জমে থাকার অভিযোগ বারবার উঠেছে। নিয়মিত ধোঁয়া দেওয়া এবং মশা মারার তেল স্প্রে হচ্ছে না বলেও অভিযোগ তুলেছেন পুরসভার বিরোধীরা। সম্প্রতি একটি আমন্ত্রণে চিনে গিয়েছিলেন মেয়র, চেয়ারম্যান ও দুই মেয়র পারিষদ। তা নিয়েও কটাক্ষ করেছেন পর্যটনমন্ত্রী থেকে পুরসভার বিরোধী দলনেতা। পাল্টা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
রবিবার মেয়র অভিযোগ করেন, মশা মারার তেল কিনতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ১৪ লক্ষ টাকা দিয়ে দায় সেরেছে। ফগিং মেশিন কেনা ও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের অন্য বিষয়ে শিলিগুড়ি পুরসভাকে আর কোনও টাকা দেওয়া হয়নি। বাম পরিচালিত পুরসভা হওয়ায় এই বঞ্চনা চলছে বলে অভিযোগ মেয়রের। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি তো শুধু সিপিএমের কর্মীর হবে না, তৃণমূল কর্মীদেরও হবে। তাই দল-মত নির্বিশেষে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতা করার প্রয়োজন ছিল।’’
বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর তাদের কাজ ঠিক করছে। মেয়র তাঁর কাজ করছেন না। তিনি বিদেশে যাচ্ছেন। রাজ্য সরকার পুরসভাকে অনেক টাকা দিয়েছে। কিন্তু পুরবোর্ড সব খরচ করতে পারছে না।’’