কেউ দলে, কেউ জোটে মাঠে নামলেন দু’জনেই

একজন দলের হয়ে, অন্যজন জোটের হয়ে। ময়দানে রয়েছেন দু’জনেই। একজনের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। আরেকজনের দলের প্রার্থী তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে নাম যে ঘোষণার অপেক্ষা, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের কোনও সংশয় নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:৫২
Share:

আঠেরোখাইতে কর্মিসভায় অশোক ভট্টাচার্য। ছবি: সন্দীপ পাল।

একজন দলের হয়ে, অন্যজন জোটের হয়ে। ময়দানে রয়েছেন দু’জনেই।

Advertisement

একজনের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। আরেকজনের দলের প্রার্থী তালিকা এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে নাম যে ঘোষণার অপেক্ষা, তা নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের কোনও সংশয় নেই। তাই শনিবারের শিলিগুড়ি দেখল মন্ত্রী গৌতম দেব ও মেয়র অশোক ভট্টাচার্য—দু’জনের প্রচারই।

বিদায়ী উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। গত বিধানসভাতেও ওই কেন্দ্র থেকেই জয়ী হয়েছিলেন তিনি। ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। সিপিএমের প্রার্থী তালিকা এখনও ঘোষণা হয়নি। তবে তৃণমূল বিরোধী জোটের হয়ে প্রচার চালাতে কোনও বাধা নেই। তাই প্রচারে পিছিয়ে থাকতে রাজি নন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। শনিবার শিলিগুড়ি লাগোয়া আঠারোখাই এলাকায় দলের কর্মিসভায় জোটের হয়ে জোর সওয়াল করলেন অশোকবাবু। কর্মীদের কাছে তাঁর আহ্বান, ‘‘প্রতীক চিহ্ন যাই থাকুক না কেন ভোট দিতে হবে তৃণমূলের বিপক্ষেই।’’

Advertisement

এ দিন সকাল থেকেই প্রচার শুরু করেন গৌতমবাবুও। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেওয়ালে তৃণমূলের প্রতীক জোড়াফুলও এঁকেছেন। দুপুরের রোদে একের পর এক পদযাত্রা করেছেন। সকাল ৯ টা নাগাদ শিলিগুড়ি পুরসভার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের শালুগাড়া থেকে পদযাত্রা শুরু করেন গৌতমবাবু। এলাকার অলিগলিতেও ঢুকে যান তিনি। বিকাল সাড়ে ৪ টা থেকে টানা তিনটি কর্মিসভা করেন গৌতমবাবু। প্রথম সভা করেন ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিদ্যাচক্র কলোনির মাঠে। ওই সভায় ৫০ জন বিজেপি সমর্থক শাসক দলে যোগদান করেন বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। পরে ৩৬ নম্বর ও ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডেও সভা করেন মন্ত্রী। আজ, রবিবার ৯ নম্বর ওয়ার্ড সমরনগরে পদযাত্রা রয়েছে তাঁর। প্রতিটি সভাতেই রাজ্য সরকার বিশেষ করে তাঁর দফতরের উন্নয়নের খতিয়ানও তুলে ধরেছেন। গৌতমবাবুর দাবি, “গত পাঁচ বছরে এই এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিলাম। এলাকার উন্নয়নে ৫০০ কোটি খরচ করেছি।’’

অশোকবাবুই বা পিছিয়ে থাকবেন কেন! সিপিএমের কর্মিসভায় যোগ দিলেও, আদতে তা হয়ে গেল যেন বিরোধী জোটের সভা। সভায় তিনি জানান, ‘‘প্রয়োজনে অন্য দলকে এই আসন ছাড়তে হতে পারে। তাতে বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই। প্রধান শত্রু তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে ছোটখাট শত্রুদের সঙ্গেও আপস করতে হবে।’’ ওই এলাকাটি মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রের অন্তর্গত, যার বিদায়ী বিধায়ক জেলা কংগ্রেসের (সমতল) সভাপতি শঙ্কর মালাকার। বাম-কংগ্রেসের জোট বা আসন সমঝোতা যাই হোক না কেন, এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী থাকবেন বলে দুই দলের কর্মীরা মনে করছেন। সে কারণেই অশোকবাবু অন্য দলের প্রার্থীর প্রসঙ্গ টেনেছেন বলে মনে করছেন বাসিন্দারা।

দলের প্রতীকে প্রার্থী না থাকলেও কর্মী সমর্থকরা যাতে উৎসাহ হারিয়ে না ফেলেন, সে কথা মাথায় রেখে সভায় অশোকবাবুর যুক্তি, ‘‘আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকের মত বামদলগুলিকেও সিপিএম আসন ছেড়ে আসে বরাবর। তাতে সব সময় লাভ হয় তা নয়, কিন্তু জোটের স্বার্থে এটা করতে হয়। এ বারে কংগ্রেসের মত দলকেও যদি জোটের স্বার্থে আসন ছাড়তে হয় তাহলেও সকলকে একসঙ্গে লড়তে হবে।’’ রাজ্যে কংগ্রেসের ১২ শতাংশ ভোট রয়েছে, বিধায়ক রয়েছেন। কংগ্রেসে বিধায়কদের নির্বাচিত করা ভোটদাতাদের সম্মান জানিয়েই তৃণমূল বিরোধী সমঝোতার রাস্তায় হাঁটতে হবে বলে অশোকবাবুর মত। তাঁর কথায়, ‘‘কংগ্রেসকে কিছু আসন দিতে হবে। এটা যুক্তিযুক্ত দাবি। লোকের বাড়ি বাড়ি যান, সমস্ত স্তরের মানুষকে বিষয়টি বোঝাতে হবে।’’ অন্যদিকে, এলাকার বিদায়ী বিধায়ক শঙ্করবাবুর অবশ্য মন্তব্য, ‘‘অশোকবাবু নিজেদের মত প্রচার করতেই পারেন। জোট নিয়ে আলোচনা চলছেই। দু-একদিনের মধ্যে তা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। সুতরাং কর্মীদের মধ্যে ভোটের প্রচারে উৎসাহ দেওয়া যেতেই পারে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement