জোরকদমে: মদনমোহন মন্দিরে তৈরি হচ্ছে রাসচক্র। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের জন্য রাসমেলা দু’দিন পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে কোচবিহারে। বিজেপি সহ একটি অংশ দাবি করছে, রাসমেলার ঐতিহ্য ভেঙে দেওয়া হল এবারে। যা কোচবিহারবাসীর কাছে খুবই অসম্মানজনক। যদিও তৃণমূল তা মনে করছে না। তৃণমূলের দাবি, নিয়ম-রীতি-নির্ঘন্ট মেনেই রাস উৎসবের সূচনা হবে। রাসমেলা এমনিতেই উদ্বোধনের দুই-তিনদিন পর থেকেই জমে উঠতে শুরু করে। সেখানে এবারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের জন্য উদ্বোধনের দিন থেকেই মেলা জমে উঠবে। এই বিতর্কের মধ্যেই অবশ্য নিরাপত্তা আটোসাটো করতে ময়দানে নেমে পড়ছে। রাসমেলার জন্য এমনিতেই ভিনজেলা থেকে পুলিশ কোচবিহারে মোতায়েন করা হয়। এবারে সেই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
মঙ্গলবারই কোচবিহারে পুলিশ লাইনের কনফারেন্স হলে বৈঠকে বসেন জেলা পুলিশের আধিকারিকরা। সেখানে কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর ছাড়াও মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ উপস্থিত ছিলেন। বিনয়বাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীকে আমাকে মেলায় পেয়েছি এটা অনেক বড় ব্যাপার। ব্যবসায়ীরাও খুব খুশি হয়েছেন। এবারে ওইদিন থেকেই মেলায় ভিড় জমবে। আসলে যারা বিতর্ক করছে তাঁরা মেলার ইতিহাস জানেন না।” তিনি আরও দাবি করেন, বহু বছর কলেরা ছড়িয়ে পড়ায় মেলায় একমাস পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক অবশ্য দাবি করেছেন, ঐতিহ্য ভেঙে মেলা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “মহামারীর জন্য একবার পিছিয়ে ছিল। এখনও মহামারী চলছে তৃণমূলের জন্য। সে জন্যেই মেলা পিছোনো হল। এটা প্রত্যেকটি কোচবিহারবাসীর পক্ষে লজ্জার।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে কোচবিহার রাসমেলা ১১ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। ওইদিনই রাসপূর্ণিমা। নিয়ম ও তিথি মেনে ওইদিন কোচবিহারের জেলাশাসক পবন কাদেয়ন বিশেষ পুজো করে রাসচক্র ঘুরিয়ে উৎসবের সূচনা করেন। এতদিন ধরে ওইদিন থেকেই রাসমেলাও শুরু হয়ে যেতে। কিছুদিন আগে শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে কোচবিহার রাসমেলায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন উদ্বোধনের সময় তিনি যেতে পারবেন না, শেষের দিকে যাবেন। কিন্তু রবিবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়, ১৩ নভেম্বর কোচবিহারে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী। ওইদিন রাসমেলায় যাবেন। ১৪ নভেম্বর একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি করে শিলিগুড়ি ফিরবেন তিনি। এর পরেই বৈঠকে বসে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যন জানিয়ে দেন, মেলা ১১ নভেম্বরের পরিবর্তে ১৩ নভেম্বর শুরু হবে। ওইদিন মুখ্যমন্ত্রী মেলার উদ্বোধন করবেন। তা নিয়েই বিতর্ক দেখা দেয়।