রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
এক সময়ে যে এলাকার বিধায়ক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সেই ব্লকের দলীয় কর্মিসভার আমন্ত্রণ পত্রে নাম নেই তাঁর। বুধবার ওই কার্ড প্রকাশ্যে আসার পর থেকে তৃণমূলের দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব তীব্র আকার নেয়।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১২ ডিসেম্বর তুফানগঞ্জ ১ (ক) ব্লকের কর্মিসভার ডাক দেওয়া হয়েছে। ওই সভা হবে নাটাবাড়ি হাইস্কুলের ময়দানে। নাটাবাড়ি রবীন্দ্রনাথের গড় বলেই পরিচিত। দু’বার ওই বিধানসভার বিধায়ক ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই ভোটে জিতে মন্ত্রী হয়েছিলেন। এখনও সেই এলাকায় মিটিং-মিছিলে দেখা যায় তাঁকে। এমন একটি জায়গায় কেন তাঁর নাম বাদ দেওয়া হল? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত যেখানে ওই কার্ডে দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ, চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ, প্রাক্তন সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় এবং যুব সভাপতি কমলেশ অধিকারীর নাম রয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ওই মিটিংয়ের বিষয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমি যা জানানোর রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।” দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ অবশ্য জানান, কেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষের নাম বাদ রাখা হয়েছে তা তিনি জানেন না। তিনি বলেন, “ওই মিটিংয়ের জন্য আমার অনুমতি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কার্ডে কার নাম রাখা হবে তা নিয়ে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। এমন হয়ে থাকলে ঠিক হয়নি। আজই খোঁজ নেব।” ওই ব্লকের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জগদীশ বর্মণ। তিনি বলেছেন, “রবীন্দ্রনাথ ঘোষ কিষাণ-খেতমজুর সংগঠন নিয়ে অনেক সভা করেন। সেখানে আমাকে ডাকেন না। বলেনও না। আমি কোনও মিটিংয়ে ডাকলে অসন্তুষ্ট হন। আর জেলায় অনেক নেতা রয়েছে কাকে ডাকব, কাকে ডাকব না এ নিয়ে চিন্তা করতে হয়। এ কারণেই নাম রাখা হয়নি।” রবীন্দ্রনাথ অনুগামী দলের কৃষক সংগঠনের কোচবিহার জেলা সভাপতি খোকন মিয়াঁর আবার বক্তব্য, “পরিকল্পনা করে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের মতো একজন নেতাকে হেয় করতে ওই মিটিং ডাকা হয়েছে। জেলায় দলের যারা দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁরা পরিচালনা করতে পাচ্ছেন না। এর পরে আমরা সারা জেলায় মিটিং করব। তখন কে অনুমতির কথা বলে তা দেখব।”
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার জেলায় তৃণমূল এখন দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। একপক্ষে রবীন্দ্রনাথ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, জগদীশ বসুনিয়া থেকে দলের কৃষক-শ্রমিক সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব রয়েছেন। আর এক পক্ষে উদয়ন, পার্থপ্রতিম, গিরীন্দ্রনাথরা রয়েছেন। সেই বিরোধের প্রভাব মিটিংগুলিতে পড়ছে বলে সাধারণ তৃণমূল কর্মীদের অভিযোগ।