ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি পুর নিগম দখল করতে কর্মীদের ‘গুড়-বাতাসা’র দাওয়াই শেখাতে শহরে আসছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টদা। ২ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় দলের সাংগঠনিক নির্বাচন। আপাতত স্থির রয়েছে, ৪ ফেব্রুয়ারির পর শহরে প্রচার, সভা করতে আসবেন অনুব্রত। দলীয় সূত্রের খবর, দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও তিনি কথা বলবেন। রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধীদের অনুব্রত মণ্ডলের নানা ‘দাওয়াই’ সব সময় চর্চায় থাকে। দলের অবশ্য দাবি, কোনও দাওয়াই নয়, অনুব্রতকে নিয়ে শহরের নানা এলাকায় প্রচার করা হবে। সেখানে তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলবেন। এতে অনেক কিছু বলা হলে দলের কিছুই করার নেই।
বিধানসভা ভোটে নিজের জেলার ১১টি আসনের মধ্যে ১০টিতেই অনুব্রতের নেতৃত্বে শাসক দলের প্রার্থীরা জিতেছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনী, পর্যবক্ষেকদের নজরদারি মধ্যে থেকেই তিনি দলের হয়ে কী ভাবে ভোট করাতে পারেন, তা প্রতিবার দেখিয়ে রাজ্য রাজনীতির শিরোনামে থাকেন। মনে করা হচ্ছে, এ বার টানা হারের রেকর্ড ঘোচাতে শিলিগুড়ির নেতা-কর্মীদের অক্সিজেন জোগাতেই তিনি আসছেন। তিনদিন আগেই অনুব্রত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পুরভোটের প্রার্থী গৌতম দেবকে দলের নির্দেশে ফোন করেছিলেন। গৌতম বলেছেন, ‘‘১ ফেব্রুয়ারি থেকে জোরদার শুরু হচ্ছে। অনুব্রত মণ্ডল ফোন করেছিলেন। উনি শিলিগুড়ি আসছেন।’’
দলীয় সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রচারে শিলিগুড়ির নেতারা চাইলেও তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। করোনা পরিস্থিতি ঠিক থাকলে আপাতত অনুব্রত ছাড়া কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মলয় ঘটকেরা আসবেন। আসার কথা যুবনেত্রী সায়নী ঘোষেরও। সব ২ ফেব্রুয়ারির পরেই চূড়ান্ত হবে। করোনা আবহে নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টের পরামর্শে ভোট পিছিয়ে দেয়। সেই সময় শিলিগুড়িতে সংক্রমণ বেশি থাকায় বাইরে থেকে নেতা-মন্ত্রীদের আসা চূড়ান্ত ছিল না। সংক্রমণ কিছুটা কমতেই প্রচার সূচি বদল হচ্ছে।
দলের জেলার নেতারা জানান, শিলিগুড়ি জিততেই হবে মানসিকতা নিয়ে সবাইকে কাজ করতে বলা হচ্ছে। রাজ্যে পরিবর্তনের পরেও শিলিগুড়িতে তৃণমূল জিততে পারেনি। লোকসভা, বিধানসভায় পরপর হার। পুরনিগম বা মহকুমা পরিষদের ক্ষমতায় দল আসতে পারেনি। এক দফায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে জেতার পরে মেয়র নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধে ক্ষমতা পায়নি দল। তৃণমূল নেত্রী বারবার শিলিগুড়ি জয়ের কথা বললেও তা হয়নি। গোষ্ঠী কোন্দল, নেতাদের একটা বড় অংশের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন কলকাতায় উঠেছে। তৃণমূলের এক প্রাক্তন জেলা সভাপতির কথায়, ‘‘এবার নয় তো আর কোনওবারই নয়।’’