অভিনব: পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে প্রচারে অনীতের দল। নিজস্ব চিত্র।
'স্বপ্ন বিক্রির ফেরিওয়ালা’দের বিরুদ্ধে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলে রাস্তায় নামলেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দার্জিলিঙের কাউন্সিলরেরা। রবিবার সকালে হামরো পার্টির বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেন ওই কাউন্সিলরেরা। দার্জিলিং পুরবোর্ডের ‘১০০ দিনের মিথ্যা’ লেখা টি-শার্ট পরে সবাই শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে পরিচ্ছন্নতা, শৌচালয় মেরামতির মতো সাধারণ কাজও পুরবোর্ড আশ্বাস দিয়েও করতে পারেনি বলে প্রচার করেন। কিছু এলাকায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ নিজেরাই করলেন ওই কাউন্সিলরেরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক হয়ে জিটিএ ভোটের জন্য আবেদন জানান সকলে। সকাল সকাল শৈলশহরে কাউন্সিলরদের এমন পোশাকে রাস্তায় দেখে অনেকেই চমকে যান। পর্যটন মরসুমে বহু লোকজন দাঁড়িয়ে বিষয়টি বোঝায় চেষ্টাও করেন।
আন্দোলনকারীদের পক্ষে কাউন্সিলর প্রতিভা রাই, নীতেশ গুরুং জানান, দার্জিলিং পুরবোর্ডের দল শুধু স্বপ্ন বিক্রি করে চলেছে। কাজের কাজ কিছুই নেই। ১০০ দিন পুরসভায় হয়ে গিয়েছে। সামান্য সাফাই, শৌচালয় সংস্কারের কাজও করতে পারেনি ঠিকঠাক। পুরবোর্ড মুখে বড় বড় প্রচার করে চলছে বলে তাঁদের অভিযোগ। পুরো দলটাই সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের ‘ব্র্যান্ডিং’ করে মানুষকে ভুল বোঝাতে ব্যস্ত বলে তাঁদের অভিযোগ।
চলতি বছরের শুরুতে দার্জিলিং পুরসভায় ভোট হয়। ৩২ আসনের পুরবোর্ডে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি ১৮টি আসনে জেতে। অনীত থাপা’র প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৯টি আসন পায়। মোর্চা নেতারা জানাচ্ছেন, অজয় এডওয়ার্ড দীর্ঘদিন জিএনএলএফের দার্জিলিং শাখার সভাপতি ছিলেন। দার্জিলিং শহরে তাঁর একটি প্রভাব রয়েছে। বেশ কিছু সামাজিক কাজও তিনি করে থাকেন। পুরভোটে তার এর সুফল পেয়েছে। তার পরে পুরবোর্ড ক্ষমতায় বসে অথনৈতিক সমস্যার কথা বলেছেন। স্বচ্ছতার কথা বলে বোর্ডের কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু বিশেষ কিছু ১০০ দিনের বোর্ড করতে পারেনি বলে অভিযোগ।
প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সেই জায়গা ধরেই হামরো পার্টির বিরুদ্ধে নেমে নেমে পড়েছে। দল সূত্রের খবর, হামরো পার্টির শক্তি শহর এলাকায় ধরে সেখানে অমর লামার মতো প্রার্থী রাখা হয়েছে। তেমনিই, এ দিনের মতো অভিনব প্রচারের সিদ্ধান্তও দল নিয়েছে।
যদিও বিষয়টিকে চমকের রাজনীতি ছাড়া হামরো পার্টির নেতারা কিছু বলতে চাননি। নিজের গাড়িতে ‘পরিবর্তন’ স্টিকার সেঁটে অজয় এডওয়ার্ড পাহাড়ে জিটিএ ভোটের প্রচার শুরু করেছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কাউন্সিলরেরা নাটক করছেন। ওঁরা জানেন আমরা কী ভাবে স্বচ্ছতার সঙ্গে ধাপে ধাপে কাজ করছি। শহর আগের থেকে অনেক পরিষ্কার। আসলে দার্জিলিং শহরে জেতার জন্য এসব চলছে। মানুষ আবার নিঃশব্দে সব জবাব দিয়ে দেবে।’’