কোচবিহারে গরুপাচারকারী অভিযোগে যুবককে গুলি বিএসএফের।
বিএসএফের গুলিতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে মৃত্যু হল এক যুবকের। কোচবিহারের দিনহাটায় শনিবারের ঘটনা। কিন্তু নিহত যুবকের পরিবারের দাবি, ভিন্ রাজ্যে কাজ করতেন তিনি। ছুটিতে বাড়িতে এসে শনিবার চাষের কাজকর্ম দেখতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই বিএসএফ তাঁকে গুলি করে খুন করেছে বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে শুরু হয়েছে চাপান-উতোর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত যুবকের নাম প্রেমকুমার বর্মণ (২৪)। তিনি দিনহাটার গীতালদহ এলাকার বাসিন্দা। শনিবার তাঁর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে। বিএসএফের দাবি, প্রেমকুমার গরু পাচারের সঙ্গে যুক্ত। শনিবার তিনি গরুপাচারের চেষ্টা করছিলেন সীমান্ত দিয়ে। সেই সময় গুলিবিদ্ধ হন তিনি।
কিন্তু বিএসএফের ওই দাবি মানতে নারাজ প্রেমকুমারের পরিবার। তাঁর পরিবারের সদস্যদের দাবি, তিনি চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি কাজ করতেন বেঙ্গালুরুতে। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। নিহত যুবকের বাবা শিবেন বর্মণ বলেন, ‘‘আমার ছেলে দিন কয়েক আগে বাড়ি ফিরেছে। আজ সকালে ও চাষের জমি দেখতে গিয়েছিল। সেই সময় হঠাৎ করে গুলির শব্দ পাই। আমরা খবর পেয়ে ওখানে গেলে বিএসএফ সেখানে যেতে বাধা দেয়। বিএসএফ জানায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে।’’ পুলিশ প্রেমকুমারের দেহ উদ্ধার করে পাঠিয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি রাজ বলেন, ‘‘বিএসএফ জানিয়েছে সীমান্তে গরু পাচার করার সময় তাদের গুলিতে এক পাচারকারী মৃত্যু হয়েছে।’’ নিহত যুবকের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ তোপ দেগেছেন বিএসএফের উদ্দেশে। তিনি বলেন, ‘‘বিএসএফের কাজ হচ্ছে সীমান্তে সাধারণ মানুষকে গুলি করা। নিরীহ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে গরু পাচারের তকমা লাগানো হয়। যে ছেলেটিকে আজ বিএসএফ গুলি করেছে সে বেঙ্গালুরুতে কাজ করত। কয়েক দিন হল বাড়ি ফিরেছিল। সে নিজের জমি দেখতে গিয়েছিল। যদি সে পাচারকারীই হয় তা হলে বিএসএফ তাকে বিএসএফ ধরল না কেন?’’
এ নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘যাঁরা ভাল মানুষ তাঁরা সীমান্তে স্বাভাবিক ভাবেই চলাফেরা করে। পাচারকারীদের বিএসএফ বাধা দেবে সেটাই স্বাভাবিক। বিএসএফ জওয়ানরা নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে সীমান্ত পাহারা দেয়। তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ ঠিক নয়।’’