প্রতীকী ছবি।
বোনের সঙ্গে শপিং মলে গিয়ে সবার চোখ এড়িয়ে চকলেট উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক তরুণীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সিসিটিভি ক্যামেরায় ওঠা সেই ছবি ‘ছড়িয়ে দেন’ মল কর্তৃপক্ষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায় ঘটনার ছবিটি। তরুণীর পরিবারের দাবি, এই ঘটনার জেরেই লজ্জায় রবিবার রাতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই তরুণী। ভুটান সীমান্ত লাগোয়া জয়গাঁর ঘটনা। এর পরে রবিবার রাতেই ওই শপিং মল ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীরা। সোমবার সকালে স্থানীয় থানা ঘেরাও করেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, জয়গাঁর সুভাষপল্লীর বাসিন্দা ২১ বছরের ওই তরুণী ও তার বোন শনিবার এলাকার এক শপিং মলে যান। অভিযোগ, সেখান থেকে কেনাকাটার পরে ওই তরুণী সবার চোখ এড়িয়ে চকলেট উঠিয়ে নেয়। যা মলের সিসিটিভি ক্যামেরায় বন্দি হয়। মল কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়ার পরে তাঁকে দু’ঘণ্টা আটকে রাখা হয় সেখানে। তাঁকে এই নিয়ে জিজ্ঞেসাবাদ করলে নিজের ভুল স্বীকার করে চকলেটের টাকা দিয়ে দেন তরুণী। পরিবারের অভিযোগ, মল কর্তৃপক্ষকে ওই তরুণী অনুরোধ করেছিলেন ক্যামেরায় বন্দি ছবিটি কোথাও না প্রচার করতে। পরিবারের দাবি, মল কর্তৃপক্ষও আশ্বাস দিয়েছিলেন তাঁকে। তার পরেও সেই ছবি মলের কর্মচারীরা একে-অন্যকে পাঠাতে থাকেন এবং তা ধীরে ধীরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়। শুরু হয় তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টাও। পরিবারের অভিযোগ, এর পরেই রবিবার রাতে নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই তরুণী।
মৃত তরুণীর বাবা রতন ঘোষ জানান, ধরা পড়ার পরে চকলেটের টাকা ফিরিয়ে দিয়ে মেয়ে ক্ষমা চেয়ে নেন। শুধু মেয়ে নন, ঘটনার খবর জানবার পরে রবিবার শপিং মলে গিয়ে তরুণীর মাও কথা বলেন। কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, এই ঘটনা কেউ জানবে না। কিন্ত পরবর্তী সময়ে সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়া সেই ছবি শপিং মলের কর্মীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেন বলে অভিযোগ। তার পরেই মানসিক অবসাদে এই কলেজছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
তরুণীর বোন বলে, ‘‘রবিবার রাতে মা ও বাবা বাইরে গিয়েছিলেন। সে সময়ে দিদি ও আমি বাড়িতে ছিলাম। দিদি আমাকে ঘরে থাকতে বলে উপরের ঘরে যায়। বেশ কিছু সময় পার হলেও না আসায় আমি ঘরে গিয়ে দিদিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। তখনই সবাইকে খবর দিই।’’
এই ঘটনার পরে রবিবার রাতেই উত্তেজিত জনতা শপিংমলের সামনে এসে বিক্ষোভ দেখানএবং সোমবার সকালে গ্ৰামবাসীরা জয়ঁগা থানার সামনে জমায়েত হয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব হন। ঘটনার পর থেকে শপিংমলটি বন্ধ রয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, এই ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। অভিযোগ হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করছে।