মর্মান্তিক: ধানের খেতে পড়ে রয়েছে হাতিটির দেহ। নিজস্ব চিত্র
ধানের জমি ঘিরতে কাঁটাতারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। সন্দেহ তাতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেল একটি পূর্ণবয়স্ক হাতি। রবিবার রাতে গজলডোবা সংলগ্ন মান্তাদারি পঞ্চায়েতের টাকিমারি গ্রামের ঘটনা। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের বেলাকোবা রেঞ্জের মধ্যে ওই এলাকা। ওই ঘটনায় সাত জন গ্রেফতার হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন তিন জন মহিলাও। পুলিশ ও বন দফতর সূত্রে দাবি, ঘটনায় দুই অভিযুক্ত এখনও পলাতক রয়েছে।
বন দফতর সূত্রে খবর, টাকিমারি গ্রামের বাসিন্দা বাঙালি ওরাওঁয়ের বাড়ির পাশে অন্য একজনের জমিতে হাতিটি মৃত অবস্থায় পড়েছিল। রাত তিনটে নাগাদ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় বনকর্মীরা। বিদ্যুতের তারের ছোয়া লেগে হাতিটি মারা গিয়ে থাকতে পারে বলে প্রাথমিক সন্দেহ বনকর্তাদের। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তাঁরা।
বৈকুণ্ঠপুর বন বিভাগের বনাধিকারিক উমা রানি জানান, বন সংরক্ষণ আইনে বিদ্যুতের তার ঘেরা জায়গায় কোনও বন্যপ্রাণী মারা গেলে তা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তিনি বলেন, ‘‘ফসলের ঘেরার জন্য ওই এলাকায় কয়েকজন বিদ্যুতের তার লাগিয়েছিল বলে জানতে পেরেছি। তার ভিত্তিতেই সাতজন গ্রেফতার হয়েছে। মঙ্গলবার তাঁদের আদালতে তোলার কথা।’’ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় মিলনপল্লি ফাঁড়ির পুলিশ এবং বেলাকোবা রেঞ্জের আধিকারিক সঞ্জয় দত্ত। বন আধিকারিকরা জানান, স্থানীয় কৃষক বাঙালি ওরাওঁয়ের জমি বিদ্যুতের তারে ঘেরা ছিল বলে অভিযোগ। বাঙালির স্ত্রী এবং দুই মেয়ে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁদের প্রতিবেশী তিন জন এবং ওই গ্রামে এসে লকডাউনে আটকে পড়া এক যুবককেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গল এবং তিস্তা লাগোয়া টাকিমারি বাতাসিভিটা, মিলনপল্লি, গজলডোবা এবং দুধিয়া এলাকায় গত কয়েকদিন থেকেই হাতির দাপট বেড়েছে বলে সূত্রের দাবি। গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, ধান, আনাজের লোভেই ঢুকছে হাতি। তাঁদের অভিযোগ, খবর দিলেও বনকর্মীরা দ্রুত আসেন না। স্থানীয় বাসিন্দা, পেশায় পশু চিকিৎসকের সহায়ক উত্তম রায় বলেন, ‘‘বিদ্যুতের তার রাতে লাগানো অন্যায়। কিন্তু হাতি তাড়ানোর দল বাড়ানো দরকার।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)