ভরা তিস্তায় থার্মোকলের ভেলায়। শনিবার জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল।
কানায় কানায় ভরে ওঠা তিস্তা নদী যখন তিন জেলায় ভাঙন এবং বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি করেছে, তখন আশার কথা শোনাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। সিকিম পাহাড়ে টানা বৃষ্টির জেরে তিস্তা নদীর জল কখনও বিপদসীমার উপর দিয়ে, কখনও বিপদসীমা ছুঁয়ে বইছে। রেকর্ড পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছে তিস্তা ব্যারাজ থেকে। সে সময়ে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আজ, রবিবার থেকে পাহাড় এবং সমতলে বৃষ্টির ব্যাপকতা কমবে। এর ফলে, নতুন করে তিস্তায় জল বাড়ার আশঙ্কা নেই।
শনিবার সকালে তিস্তা নদীর সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত এলাকায় দোমহানি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত লাল সতর্কতা জারি করা হয়। এক সময় গজলডোবা তিস্তা ব্যারাজ থেকে ছ’হাজার কিউমেক (প্রতি মিনিটে জল মাপার একক) জল ছাড়া হয়েছে, যা কিনা ‘রেকর্ড’। যদিও তার পর থেকেই জলস্তর কমতে শুরু করেছে।
নদীতে জল বেশি থাকার সঙ্গে ব্যারাজ থেকে আরও জল ছাড়ায় দোমোহানি থেকে মেখলিগঞ্জের কিছু এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা তৈরি হয়। নদীতে জল বেশি থাকায় সেবক লাগোয়া কিছু এলাকায় নদীর পাড় ভাঙতে শুরু করে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তিস্তা, জলঢাকা-সহ সব বড় নদীর উপরে নজর রাখা হচ্ছে।
এ দিন দুপুরের পর থেকে তিস্তায় জলস্তর কমতে শুরু করে। যদিও দোমোহানি থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত অসংরক্ষিত এলাকায় জারি রয়েছে হলুদ সর্তকতা। এ দিন দুপুর ৩টের কিছু পরে লাল সতর্কতা প্রত্যাহার করে হলুদ সতর্কতা
জারি করা হয়। ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণও কময়ে দেওয়া হয়। দুপুর ৩টের পরে জল ছাড়া হয়েছে ২,১৭৫ কিউমেক। এ দিন সকালে তিন হাজার কিউমেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছে। দুপুরের পরে ফের জল ছাড়ার পরিমাণ কিছুটা বাড়ে। সেচ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘কখনও বেশি, কখনও কম— এ ভাবেই জল ছেড়ে ব্যারাজের ভারসাম্য রক্ষা করা হয়। বন্যার আশঙ্কা মাথায় রেখেই
জল ছাড়া হয়।’’
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আপাতত উত্তরবঙ্গের আকাশে বৃষ্টির মেঘ নেই। আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘আপাতত কয়েক দিন ভারী বৃষ্টি হবে না বলেই পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। পাহাড়েও বৃষ্টি কমবে।’’