প্রতীকী চিত্র।
নিয়োগ পরীক্ষার আগেই কি চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে থেকে ‘বাছাই’ হয়ে গিয়েছে? খোদ শাসকদল তৃণমূলের অন্দরেই এমন সন্দেহ দানা বাঁধায় বিতর্কে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ।
পাঁচটি পদের জন্য শনিবার নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের এক প্রাক্তন ব্লক সাধারণ সম্পাদক বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নিজের সন্দেহের কথা জানিয়ে অভিযোগ করেছেন। তার জেরে জেলার শিক্ষামহলে হইচই শুরু হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সূত্রে খবর, গত সেপ্টেম্বর মাসে সংসদ থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে এক জন, লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক পদে তিন জন ও নৈশপ্রহরী পদে এক জনকে নিয়োগ করা হবে। লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের তিনটি পদের একটি তফসিলি জাতি ও একটি এক্সেমটেড ক্যাটেগরির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত করা রয়েছে। সংসদ সূত্রে খবর, পদগুলির জন্য প্রায় ৯০০টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। শনি ও রবিবার সে সবের জন্য নিয়োগ পরীক্ষা হবে।
তার আগেই বৃহস্পতিবার তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ দাস জেলাশাসকের দফতর ও দলের জেলা শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে লিখিত অভিযোগ করায় বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
বিশ্বনাথের অভিযোগ, ‘‘আমার ছেলে অমিত দাসও লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক পদের জন্য ফর্মপূরণ করেছে। অন্যান্য ছেলেমেয়েরাও ফর্ম পূরণ করেছে। অথচ, লিখিত পরীক্ষা না হলেও বাইরে কানাঘুসো চলছে, পাঁচটি পদের মধ্যে চারটি পদে নাকি প্রার্থী বাছাই করা হয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে ইন্টারভিউয়ের পরে যদি সেই চার জনকেই নিয়োগ করা হয়, তা হলে টাকা খরচ করে এত ছেলেমেয়ের পরীক্ষা দিয়ে লাভ কী?” এমন হলে আমরণ অনশনে বসারও হুমকি দিয়েছেন তৃণমূলের ওই নেতা। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত করে পাঁচটি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেও প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
কিছুদিন আগেই বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় খুদে প্রতিযোগীদের জুতো দেওয়া নিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে ঘিরে বিতর্ক দানা বেঁধেছিল। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্বনাথের এই অভিযোগ নয়া বিতর্ক তৈরি করেছে।
যদিও সংসদ কর্তারা ওই অভিযোগ মানতে নারাজ। সংসদের চেয়ারম্যান অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি নিয়ম অনুযায়ী স্বচ্ছতার সঙ্গেই নিয়োগ পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার সময়ই সেটা সবাই বুঝতে পারবেন। এ ধরণের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’
জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মীনা বলেন, ‘‘এ ধরণের কোনও অভিযোগ আমার হাতে আসেনি। দফতরে এমন অভিযোগ জমা পড়েছে কিনা তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, ‘‘আমি কলকাতায় রয়েছি। এমন কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি।’’