বিপর্যয়: শোকার্ত পরিবার।
বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে এক তৃণমূল নেতাকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলেরই গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েত সদস্যর জা-কেও খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে মালদহের চাঁচলের খানপুরে। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম সেতাবুর রহমান(৪০)। গুরুতর জখম নাইলা বিবি মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি। নাইলার স্বামী কামাল, ভাসুর জামালুদ্দিন, দেওর সাইফুদ্দিন ও পঞ্চায়েত সদস্যা জা সারিফা বানু হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে সেতাবুরকে খুন করেন বলে অভিযোগ। বাধা দেওয়ায় নাইলাকেও খুনের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ নিহতের স্ত্রীর। ঘটনার পরই দুই নেতার বাড়ির মাঝামাঝি জায়গায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
দিনকয়েক আগে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে জলপাইগুড়িতে বাড়িতে ডেকে এক যুবককে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল। চাঁচলেও এই ঘটনাটি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ জেরেই, জানিয়েছে পুলিশ। যদিও একইসঙ্গে প্রতিবেশীকে খুনের পাশাপাশি পরিবারের মহিলাকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় তা সন্মান রক্ষার্থে কি না সেই প্রশ্ন উঠেছে। রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত কামালকে গ্রেফতার করেছে। বাকিরা বাড়িতে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহেই ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত সেতাবুর চন্দ্রপাড়া অঞ্চল তৃণমূলের সহ সভাপতি। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই সদস্যা সারিফা বানু। সারিফার স্বামী জামালুদ্দিন, দেওর কামালও এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। একই এলাকায় বাড়ি হওয়ায় সারিফার বাড়িতে যাতায়াত ছিল সেতাবুরের। নাইলার সঙ্গে তার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা মানতে চাননি সেতাবুরের পরিবার।
সেতাবুরের স্ত্রী আলিয়ারা খাতুনের অভিযোগ, রাজনৈতিক নানা কাজে সারিফার বাড়িতে যেতেন সেতাবুর। বৃহস্পতিবার রাতে ফোন করে সেতাবুরকে বাড়িতে ডাকেন কামাল। রাজনৈতিক কোনও বিষয়ে বচসার মধ্যেই তাকে হাসুয়া দিয়ে কোপানো হয়। বাধা দেওয়ায় কোপানো হয় নাইলাকেও। রক্তাক্ত অবস্থায় দু’জনকে চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান। রাতেই দু’জনকে মালদহ মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। ভোর রাতে সেখানেই সেতাবুর মারা যান।
চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি হবিবুর রহমান বলেন, ‘‘এতে রাজনীতি নেই, দলীয় বিষয়ও নয়। দুই পরিবারের আভ্যন্তরীণ সমস্যা। তদন্ত সাপেক্ষে পুলিশ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক।’’