ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে জমি ‘দখলে’র নালিশ দাখিল হল জেলা প্রশাসনের কাছে। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল শুক্রবার, জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের কাছে গিয়ে এই নালিশ জানিয়েছেন এবং অভিযোগ জমা করেছেন। তৃণমূলের অভিযোগ, বানারহাটের চামুর্চি রোডে সরকারি খাস জমি দখল করে সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা প্রাসাদোপম বাড়ি এবং বাজার বানাচ্ছেন। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ নির্বাচিত হয়ে জন বার্লা জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, তৃণমূলের অভিযোগ গ্রহণ করে তা খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। ভূমি দফতর থেকে রিপোর্টও চাওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। জমি দখলের অভিযোগে সত্যতা মিললে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপও করা হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ক্ষেত্রে প্রশাসনের সরাসরি পদক্ষেপ করার আইনত জটিলতা রয়েছে। তখন বিষয়টি লোকসভার স্পিকারকে জানানো হতে পারে বলে খবর। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “প্রশাসনকে বলেছি দ্রুত সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করতে। যে জমিতে বাড়ি তৈরি হচ্ছে তার সব নথি জেলাশাসকের দফতরে জমা দেওয়া হয়েছে।”
আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা তৃণমূলে যোগ দিয়েই বিজেপি সাংসদ জন বার্লার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ করেছিলেন। প্রথমে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লার বিলাসবহুল বাড়ি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তারপর গঙ্গাপ্রসাদ অভিযোগ করেন, চামুর্চি রোডে পূর্ত দফতরের জমি দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করেছেন বিজেপি সাংসদ। শুক্রবার গঙ্গাপ্রসাদ বলেন, “আমি আগেই বলেছি বিজেপি সাংসদ জন বার্লা পূর্ত দফতরের জমি দখল করে মার্কেট কমপ্লেক্স করেছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”
এ নিয়ে অস্বস্তি রয়েছে বিজেপির মধ্যে। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার কোনও মন্তব্য মেলেনি। এ দিন সকালে বাংলাভাগের দাবি এবং তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বিরোধিতা প্রসঙ্গে জানতে, জন বার্লাকে ফোন করা হলে তিনি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে এখন আর কোনও কথা বলবেন না জানিয়ে ফোন কেটে দিয়েছিলেন। পরে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূলের অভিযোগ প্রসঙ্গ জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাংসদ তথা সদ্য কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হওয়া জন বার্লা ফোন ধরেননি।
বিজেপির জেলা আহ্বায়ক ভূষণ মোদক বলেন, “উত্তরবঙ্গের দুই জেলার দুই সাংসদ কেন্দ্রের মন্ত্রী হয়ে যাওয়ায় তৃণমূল নেতারা ভয় পেয়ে গিয়েছেন। তাই জন বার্লার বিরুদ্ধে উল্টোপাল্টা অভিযোগ করছেন তাঁরা।” ভূষণের পাল্টা প্রশ্ন, “কেউ সরকারি জমিতে কিছু তৈরি করলে সেটা সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতর বুঝবে। কিন্তু সরকারি দফতর তো এ নিয়ে কিছু বলছে না। তা হলে জলপাইগুড়ির তৃণমূল নেতারা এটা নিয়ে বলার কে?”