কাটাই হয়নি পুকুর, ৮০ লক্ষ তুলে নেওয়ায় অভিযুক্ত তির নালিশ তপনে

এ নিয়ে অভিযোগকারী স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, ‘‘আমরা আরটিআই করে এই দুর্নীতির হদিশ পেয়েছিলাম। তারপরে তৎকালীন বিডিওকে অভিযুক্ত প্রধান, সদস্য, পঞ্চায়েত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠলেও কেউ আজ পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়নি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

তপন শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েতের তথ্য বলছে, পুকুর খনন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই পুকুরের কোনও অস্তিত্ব নেই। শুধু পুকুরই নয়, রাস্তা নির্মাণ থেকে জমি সমানের কাজ সব কিছুই খাতায়-কলমে করা হলেও বাস্তবে কোনও কাজই হয়নি বলে চাঞ্চল্যকর সব অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, এইভাবে কোনও কাজ না করেই তপন ব্লকের রামপাড়া চেঁচড়ার-২ নম্বর বাবতৈল সংসদে প্রায় ৮০ লক্ষ টাকার আর্থিক তছরুপ করা হয়েছে। স্থানীয় চার বাসিন্দা আরটিআই করে সেই দুর্নীতি জানতে পেরে তৎকালীন তৃণমূলের প্রধান, বাবতৈল সংসদের তৃণমূল সদস্য, সুপারভাইজার ও পঞ্চায়েত কর্মীসহ মোট ১৪ জনের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেছেন।

Advertisement

এ নিয়ে অভিযোগকারী স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক হোসেন বলেন, ‘‘আমরা আরটিআই করে এই দুর্নীতির হদিশ পেয়েছিলাম। তারপরে তৎকালীন বিডিওকে অভিযুক্ত প্রধান, সদস্য, পঞ্চায়েত কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠলেও কেউ আজ পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়নি। তাই হাইকোর্টে গিয়েছি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। একটা সংসদে একটা কাজেই যদি ৮০ লক্ষ টাকার দুর্নীতি হয়, তাহলে গোটা ব্লক, জেলা জুড়ে কত হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে তা সহজেই অনুমান করা যায়। এই দুর্নীতি বন্ধ করতেই আমরা হাইকোর্টে গিয়েছি।’’

সূত্রের খবর, ২০১৭-১৮ আর্থিক বর্ষে বাবতৈল সংসদে ৩১টি পুকুর খনন, চারটি রাস্তা তৈরি ও তিনটি জমি সমানের কাজের জন্য প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। অভিযোগকারী যুবকেরা অনলাইনে পঞ্চায়েতের কাজের তালিকা দেখে অবাক হয়ে যান, যে তাঁদের সংসদে এতগুলি পুকুর খনন, রাস্তা নির্মাণ হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, আরটিআই করে কাজের মাস্টার রোল বের করে কোথায় কোথায় এই কাজ হয়েছে সেটা খুঁজে দেখতে গিয়েই চক্ষু চড়কগাছ। দেখা যায়, যেখানে পুকুর খননের কাজ দেখানো হয়েছে সেখানে এখনও ধানের জমিই রয়েছে। অভিযোগ, এইভাবে পঞ্চায়েতের ছয়জন কর্মী, ওই সংসদের ছয়জন সুপারভাইজার, তৎকালীন প্রধান বিমল মাহাতো ও তৎকালীন মেম্বার রাজ্জাক আলি ভুয়ো ‘মাস্টার রোল’ তৈরি করে এই আর্থিক দুর্নীতি করেছেন। বিডিওর তদন্তে দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে বলে খবর। কিন্তু এখনও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই তাদের শাস্তির দাবি চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছেন অভিযোগকারী চার যুবক।

Advertisement

এদিকে, অভিযুক্ত সদস্য তথা তৃণমূল নেতা রাজ্জাক আলি বলেন, ‘‘আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। কাজ হয়েছে, তবে হয়ত সম্পূর্ণ কাজ হয়নি।’’ প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান বিমলের অবশ্য দাবি, ‘‘আমি নির্বাচনের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। তখন সুপারভাইজাররা মাস্টার রোল তৈরি করে আমার থেকে সই করে নিয়েছে। সম্পূর্ণ কাজের বিষয় আমি বলতে পারব না।’’ তপনের বিডিও সুশান্ত মাইতি বলেন, ‘‘এই অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement