কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ-সহ একাধিক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। এ বার কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপার তথা সহকারী অধ্যক্ষ (এমএসভিপি) রাজীব প্রসাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে এল। হাসপাতালেরই এক প্রাক্তন চিকিৎসকের অভিযোগ, ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাল্টে দিতে চাপ তৈরি করতেন ‘এমএসভিপি’। অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজের পরীক্ষা চলাকালীন নজরদারিতে ঢিলে দেওয়া বা ছাত্রদের নম্বর বাড়ানোর নির্দেশও দিতেন পরীক্ষকদের। রাজীব অবশ্য দাবি করেছেন, এই অভিযোগ ‘মিথ্যে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি চাই, অভিযোগগুলি নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক। তা হলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে সব কিছু।’’
রাজীব প্রসাদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ করেছেন কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের প্রাক্তন চিকিৎসক তনয় মহন্ত। তাঁর দাবি, এই অভিযোগ করায় তাঁকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বর্তমানে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে কর্মরত। তনয় অবশ্য ওই অভিযোগ করেছেন গত মার্চ মাসে। লিখিত ভাবে স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক জায়গায় ওই অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি হাসপাতালে থাকাকালীন যা-যা দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে, আমি তা-ই তুলে ধরে অভিযোগ করেছি। সেখানে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পরিবর্তন করতে চাপ দেওয়া, পরীক্ষায় নজরদারি সংক্রান্ত কিছু অভিযোগও রয়েছে। যদিও তদন্ত হয়নি। উল্টে, আমাকে বদলি করা হয়েছে। এখন আর জি করে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে আমি চাই, আমার তোলা অভিযোগেরও তদন্ত হোক।’’
জবাবে রাজীবের বক্তব্য, ‘‘পরীক্ষা ব্যবস্থায় প্রভাব খাটানো নিয়ে আমার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। চাই তদন্ত হোক। ওই পরীক্ষা চলাকালীন পাঁচ জন পরিদর্শক থাকেন। তার মধ্যে তিন জন বাইরের, দু’জন মেডিক্যাল কলেজের। তদন্ত হলেই স্পষ্ট হবে।’’
এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কোচবিহার জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক প্রতিষ্ঠান। ২০১৮ থেকে এমএসভিপির দায়িত্বে রয়েছেন রাজীব। ২০২৩-এও রাজীবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ করেন মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অ্যাকাউন্টস অফিসার নুরউদ্দিন মল্লিক। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকের কাছে এ নিয়ে অভিযোগও জানান তিনি। তবে তদন্ত কত দূর এগিয়েছিল, তা সামনে আসেনি। এ বার ফের ময়না তদন্তের রিপোর্ট বদল বা পরীক্ষায় অনৈতিক ভাবে মাথা গলানোর অভিযোগ উঠল রাজীবের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে রাজীবের দাবি, ‘‘ময়না তদন্তের রিপোর্ট যে বদলানো যায়, তা জানতাম না।’’ ‘অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেস ডক্টরস’-এর কুচবিহার জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন দাস বলেন, “বিষয়টি সম্পর্কে এখনও ভাল জানি না। জেনে, নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে প্রতিক্রিয়া জানাব।”