বন বিভাগ থেকে অবৈধ বলে জানানো অন্তত ২০০ গাছের লগ ভর্তি ট্রাক ছেড়ে দিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ।
কয়েকদিন আগে বাম পরিচালিত জাকিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে গাছের লগ বিক্রি নিয়ে কারচুপির অভিযোগ করে থানায় নালিশ করেছিল বিরোধী তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা। এরপরই পুলিশ গাছের লগ ভর্তি ওই ট্রাকটিকে আটক করে। খবর পেয়ে স্থানীয় বন দফতরের বিট অফিসার গিয়ে পরীক্ষা করেন। এরপর শনিবার পুলিশ আটক ট্রাক ভর্তি গাছের লগ থানা থেকে ছেড়ে দেয় বলে অভিযোগ। এ বিষয়ে বন দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিন ঘটনাটি সামনে আসতে হইচই শুরু হলে পুলিশ ও বন দফতরের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সুপার বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে দিয়ে অভিযোগের তদন্ত করা হবে। তাতে কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি ঝড়ে কুমারগঞ্জের জাকিরপুর পঞ্চায়েতের বেশ কিছু আকাশমনি গাছ ভেঙে পড়েছিল। সেই গাছগুলি কেটে ভ্যালুয়েশন ও অকশনের জন্য বন দফতরের অনুমতি চেয়েছিল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। পঞ্চায়েতের বিরোধী তৃণমূল নেত্রী রেক্সেনা বিবি, সদস্য সুবোধ সরকার, প্রাক্তণ তৃণমূলের প্রধান খালেদ মণ্ডল অভিযোগ করেন, সামান্য কিছু গাছের লগ বন দফতরের সামনে তুলে ধরে বাকি শতাধিক লগ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ লুকিয়ে রাখেন। সেগুলি অনুমতি নেওয়া লগের সঙ্গে গোপনে বিক্রি করা হয় বলে তাদের অভিযোগ। আরএসপি পরিচালিত জাকিরপুর পঞ্চায়েতের প্রধান মামুদা বিবি অভিযোগ অস্বীকার করেন। তার বক্তব্য, বিরোধীদের প্রথমে বিষয়টি বুঝতে অসুবিধা হয়েছিল। তাই অভিযোগ করেছিল। ১৮০টি লগ ছিল। যা বনদফতরের অনুমতি নিয়ে বিক্রি করা হয়। এখনও পঞ্চায়েতের গুদামে ৩০টি গাছের লগ রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বালুরঘাট ফরেস্টের রেঞ্জার আব্দুর রজ্জাক বলেন, ওই পঞ্চায়েত থেকে গাছের লগ নিলামের জন্য অনুমতি ও দর ঠিক করে দেওয়ার জন্য বলা হয়। লগ চিহ্নিত করে দেওয়ার পর ওই পঞ্চায়েত থেকে বেশ কিছু লুকিয়ে রাখা লগও বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ করে বিরোধী সদস্যরা। ওই লগের সঙ্গে লুকিয়ে রাখা চোরাই লগ ট্রাকে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ আটক করে। থানা থেকে খবর পেয়ে আমাদের তরফে গিয়ে ৫টি লগ চিহিৃত করা হয়।