অব্যবস্থা: মালদহ কলেজে বারান্দায় বসে দিতে হচ্ছে পরীক্ষা। ফাইল চিত্র
পরিকাঠামো রয়েছে দু’হাজার পড়ুয়ার। কিন্তু কোনও কলেজে রয়েছেন পাঁচ হাজার। আবার কোথাও ছ’হাজার পড়ুয়া। মালদহের কলেজগুলোর চিত্র এরকমই। এর জেরে উচ্চশিক্ষার জন্য ভিন্ জেলা বা অন্য রাজ্যের কলেজগুলোয় ছুটতে হচ্ছে মালদহের পড়ুয়াদের। এই পরিস্থিতিতে মালদহ জেলায় আরও ডিগ্রি কলেজ ও মহিলা কলেজের দাবি তুলেছেন ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকেরা।
শুধু কলেজ কম এমন নয়। কলেজগুলোয় কম রয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের আসনও। সেসব বাড়ানোরও দাবিও উঠছে। জেলার সকল পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে বাড়তি কলেজের প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা মহলের কর্তারাও। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্র বলেন, “প্রতি বছরই জেলায় উচ্চমাধ্যমিকে পাশের হার বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুপাতে জেলায় কলেজের অভাব রয়েছে।” মালদহে কমপক্ষে আরও চারটি কলেজ প্রয়োজন বলে জানান তিনি। কলেজের জন্য জেলার মানুষ, জনপ্রতিনিধিদেরই এগিয়ে আসতে হবে বলে তাঁর মত।
শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, জেলায় মোট ১৯৮টি উচ্চ মাধ্যমিক এবং ৮১টি হাই মাদ্রাসা রয়েছে। চলতি বছর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে পাশের হার ছিল ৭৯.২৩ শতাংশ। ২০১৬-তে ছিল ৭৯.৭৬ শতাংশ। প্রতি বছরই পাশের হার বাড়লেও স্নাতক স্তরে ভর্তি হতে কালঘাম ছুটছে পড়ুয়াদের। মালদহে মোট ১১টি কলেজ রয়েছে। সব কলেজ মিলিয়ে মোট ৯০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। যা পরিকাঠামোর তুলনায় অনেক বেশি। এর জেরে পরীক্ষা নিতে গিয়েও নাজেহাল হচ্ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অধিকাংশ সময়ই বাঁশ দিয়ে প্যান্ডেল করে কলেজে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সম্প্রতি মালদহ কলেজে মেঝেতে, সাইকেল স্ট্যান্ড এবং বারান্দায় বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছিল শিক্ষা মহলে।
মালদহের কালিয়াচকের সুজাপুর, মোথাবাড়ি, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর ও হবিবপুর ব্লকে একটি করে কলেজের প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া জেলাতে প্রয়োজন রয়েছে আরও একটি মহিলা কলেজের। সমস্যা রয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের পরিকাঠামো নিয়েও। জেলার ১৯৮টি উচ্চ মাধ্যমিক এবং ৮১টি হাই মাদ্রাসার মধ্যে মাত্র ৩০ শতাংশ স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগ চালু রয়েছে। এ দিকে জেলায় শুধুমাত্র মালদহ এবং গৌড় মহাবিদ্যালয়েই বিজ্ঞান বিভাগ রয়েছে। চাঁচল কলেজে বিজ্ঞান বলতে শুধুমাত্র গণিত বিভাগ রয়েছে।
বিহারের একটি কলেজে ভর্তি হয়েছে জেলার ছাত্রী শম্পা মণ্ডল, কোয়েল সরকার, তাঁরা বলেন, “৭০-৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েও জেলার কলেজে ভর্তি হতে পারিনি। বাধ্য হয়েই বিহারে যেতে হয়েছে।” ছাত্র-ছাত্রীদের ভিড় সামাল দিতে পরিকাঠামোর উন্নয়নের পক্ষে সওয়াল করেছেন গৌড়বঙ্গ অধ্যক্ষ অ্যাসোসিয়শনের সম্পাদক মহম্মদ সামসুল হক। তা না হলে এই ছবির বদল হবে না বলেই তাঁর মত।