ভোট-প্রস্তুতি: আগে থেকেই দেওয়াল দখল। নিজস্ব চিত্র
পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। কবে পুরভোট হবে তার নির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনও স্পষ্ট নয়। কিন্তু পুরভোটের কথা মাথায় রেখে ‘দেওয়াল দখলে’ কোনও দলই পিছিয়ে থাকতে চাইছে না। তৃণমূল, বিজেপি তো বটেই, লড়াইয়ে পাল্লা দিতে আসরে নেমেছে বামেরাও। সবমিলিয়ে ত্রিমুখী লড়াইয়ের ‘ওয়ার্ম আপ’ শুরু হয়ে গিয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, কোচবিহারে আগামী পুরসভা ভোট ত্রিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। তৃণমূল, বিজেপি একক ভাবে ২০টি ওয়ার্ডের সবগুলিতে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে, বাম ও কংগ্রেস জোট করে লড়াইয়ের কথা ঘোষণা করেছে। দুই শিবিরের আসন রফাও চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। তাতেই ত্রিমুখী লড়াইয়ের আবহ জোরদার হচ্ছে।
তাই কোনও পক্ষই প্রস্তুতিতে খামতি রাখতে চাইছে না। দেওয়াল দখলের লড়াইয়েও ওই বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। কিন্তু ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই দেওয়াল দখল নিয়ে এমন তৎপরতা কেন?
রাজনৈতিক মহলের একটি সূত্রের খবর, এলাকায় সাংগঠনিক শক্তি বোঝাতে দেওয়াল দখলের ‘প্রতাপ’ একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ যার দখলে যত বেশি দেওয়াল থাকবে তা নিয়ে চায়ের দোকানে আলোচনাও বেশি হয়। তাতেও প্রচারের বেশ কিছুটা কাজ হয়ে যায়। তা ছাড়া দেরি হলে পছন্দের দেওয়াল অন্যদের ‘দখলে’ যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। কর্মী, সমর্থকদের চাঙ্গা করতে ও ‘ভোটের হাওয়া’ তুলতে দেওয়াল লিখনের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। বিশেষ করে মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়ে মাইক ব্যবহার করে কর্মসূচি করা যাচ্ছে না। তাই অন্য কাজ এগিয়ে রাখার একটা তাগিদ সব দলেরই রয়েছে। কয়েক জন বাসিন্দার কথায়, ‘‘দেওয়াল লিখনে যুযুধান দলের কার্টুন, ছড়াও বিভিন্ন ভোটের মুখে উঠে আসে। এ বারে সে সব হয় কিনা সেটাই দেখার।’’
যদিও ওই প্রচার কৌশল নিয়ে কোন শিবিরই সে ভাবে মুখ খুলতে চায়নি। কোচবিহার পুরসভার তৃণমূল পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ বলেন, “সব ওয়ার্ডেই দেওয়াল দখলে রাখার কাজ শুরু হয়েছে। লেখার কাজ পরে করা হবে।” কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা এলাকার এক তৃণমূল নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, “দেওয়ালে চুনের প্রলেপ দিয়ে আমরা লেখার জন্য তৈরি থাকছি।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা কমিটির নেতা বিরাজ বসু বলেন, “আমাদের দলের তরফেও বেশ কিছু দেওয়াল ইতিমধ্যেই দখল করা হয়েছে। সেখানে নানা বিষয় লেখা হবে।” সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, কোচবিহার পুরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা বলেন, “প্রচুর দেওয়াল আমরাও দখল নিয়েছি।” দলীয় সূত্রের দাবি, বাম-কংগ্রেস যৌথ মঞ্চের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হলেই নাম, প্রতীক-সহ দেওয়াল লিখন শুরু হবে।’’
আর এক নেতা জানাচ্ছেন, বীজ বপণের আগেই জমি তৈরি করতে হয়। সবাই সেই জমি তৈরিতেই মন দিয়েছেন।