প্রতীকী ছবি।
গণপিটুনির ঘটনা রুখতে পুলিশকে সহযোগিতা করলেই মিলবে সম্মান। ছেলেধরা সন্দেহে নিরীহ মানুষের উপর অত্যাচার বন্ধে এমনই ভাবছে আলিপুরদুয়ার জেলা পুলিশ। এরই মধ্যে রবিবার সকালে কালচিনিতে ছেলেধরা সন্দেহে ফের একজনকে আটক করে জনতা। তবে পুলিশের দাবি, তাঁকে মারধর করা হয়নি।
জুন মাসের শুরুতে আলিপুরদুয়ার শহরের কাছে পাটকাপাড়াতে ছেলেধরা গুজব ছড়াতে শুরু করে। এলাকায় গণপিটুনির আশঙ্কায় মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তারপরও সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে ওই মাসের মাঝামাঝি সময়ে সেখানে কবিরাজি ওষুধের ব্যবসায়ী এক বৃদ্ধকে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ছেলেধরা গুজব জেলার অন্যত্রও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। যার ফলস্বরূপ কালচিনির রায়মাটাং চা বাগান, দলসিংহপাড়া, আলিপুরদুয়ারের মাঝেরডাবরি চা বাগান, জংশনের ভোলারডাবরি, বাদলনগর, বীরপাড়ার দলগাঁও স্টেশন কিংবা মাদারিহাট-সহ বিভিন্ন জায়গায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটতে থাকে। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু ঘটনায় গণপিটুনির শিকার হওয়া ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হতে হয় পুলিশকেও।
শনিবার রাতেও মাঝেরডাবরি চা বাগানে গণপিটুনির শিকার হওয়া এক ব্যক্তিকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশ। রবিবার সকালেও কালচিনিতে ছেলেধরা সন্দেহে জনতা একজনকে আটক করে। তবে তাঁকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, গণপিটুনির ঘটনা রুখতে অনেক জায়গায় যেমন পুলিশকে আক্রান্ত হতে হচ্ছে, তেমনই অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের একটি অংশ গণপিটুনির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর পাশাপাশি পুলিশকে সহযোগিতাও করছেন। এ বার সহযোগিতা করা সেই মানুষদের সম্মান দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করলেন জেলা পুলিশের কর্তারা। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে সচেতনতামূলক প্রচারের সুফল আমরা পাচ্ছি। অনেক জায়গায় জনগণই গণপিটুনির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছেন। এ ধরনের ঘটনা রুখতে যারা পুলিশকে বেশি করে সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসবে, তাঁদের কোনওভাবে সম্মান জানানো যায় কি না সেটাও ভাবা হচ্ছে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, জেলায় গণপিটুনির ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ধারায় মামলা রুজু করতে ইতিমধ্যেই থানাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে পুলিশের তরফে সচেতনতামূলক প্রচারও চালানো হচ্ছে। এ বার সেই সচেতনতামূলক প্রচারে বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনকে যুক্ত করার কথাও ভাবছেন পুলিশ কর্তারা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ক্লাবের সদস্যরা নিজেরা সচেতন হয়ে অন্যদের সচেতন করলে জেলায় এ ধরনের ঘটনা সম্পূর্ণভাবে রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।’’