দার্জিলিং পুরসভার আর্থিক হিসেবনিকেশ প্রতি মাসে বাসিন্দাদের জানাতে শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সম্প্রতি হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড বিষয়টি নিয়ে পুর চেয়ারম্যান রীতেশ পোর্টালের সঙ্গে কথা বলেন। ঠিক হয়েছে, দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ পুরবোর্ড চালাতে এই ব্যবস্থা চলবে। পুরসভায় তহবিলে কী আছে, ব্যাঙ্কে কত টাকা রয়েছে, কোন প্রকল্পের কী খরচ, কত টাকা বেতন বা মজুরি দিতে হচ্ছে, কোন পরিষেবার খরচ কত, সব মিলিয়ে পুরসভায় আয়-ব্যয়ের রিপোর্ট জনসমক্ষে জানানো হবে। প্রতি মাসে চেয়ারম্যানের দফতর থেকে তা তৈরি করা হবে।
হামরো পার্টির সভাপতি অজয় বলেছেন, ‘‘পুরসভা মূলত নাগরিক পরিষেবার কাজ করে। প্রকল্পভিত্তিক সরকারি বরাদ্দ ছাড়াও কর আদায় হয়। মানুষের জন্য পুরসভা কাজ করে। তাই বাসিন্দাদের পুরবোর্ডের আয়-ব্যয় জানার অধিকার রয়েছে।’’ তিনি জানান, পুরসভার ভান্ডার প্রায় শূন্য। দায়িত্ব নিয়ে কী ভাবে বোর্ড আর্থিক স্বনির্ভরতার দিকে এগোবে তা স্বচ্ছতার সঙ্গে জনসমক্ষে রাখা হচ্ছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরে দার্জিলিং পুরসভা সরকারি অফিসারদের নিয়ে গঠিত প্রশাসনিক বোর্ড চালিয়েছে। নতুন করে প্রকল্পভিত্তিক কিছু টাকা বরাদ্দ এবং কাজ হয়েছে। ২০১২ সালের পর থেকে পুর বাজেটে আয়-ব্যয়ের ফারাক সামান্যই। গত কয়েক বছর নির্বাচিত বোর্ড না থাকায় নতুন আয়ের রাস্তা খোলেনি পুরসভায়। সরকারি বরাদ্দের উপর পুরসভায় দৈনন্দিন কাজ, বেতন, মজুরি দেওয়া চলেছে। তাতে ভাঁড়ার প্রায় খালি বলে নতুন বোর্ডের দাবি। জিটিএ-র অধীনে পাহাড়ে কয়েকশো কোটি টাকা এসেছে। কিন্তু পুরসভায় সেই টাকার বরাদ্দ খুব একটা আসেনি বলে অভিযোগ।
ক্ষমতায় বসেই নতুন বোর্ড আয় বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছে। ইতিমধ্যে পুর এলাকায় পর্যটন-নির্ভর আয় বাড়াতে একাধিক প্রস্তাব ও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে। দার্জিলিং পাহাড়ের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যকে সামনে রেখে পর্যটকদের জন্য রোজ টাউন হলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কার্নিভাল, নিয়মিত খাদ্যমেলা, স্কাইওয়াক তৈরির ভাবনাও নতুন পুরবোর্ডের রয়েছে। সেখান থেকে পুরবোর্ড কিছুটা আয়ের রাস্তা খোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। অজয় বলেছেন, ‘‘দার্জিলিং শহরকে সুন্দর করে পর্যটনবান্ধব শহর হিসাবে গড়তে হবে। চেয়ারম্যান বহুদিন ধরে পাহাড়ে কাজ করছেন। উনি জানেন কোথায় কী কাজ করতে হবে।’’