প্রতীকী ছবি।
সংখ্যালঘু লোকজন বেশি, এমন চারটি বিধানসভাকে সামনে রেখে কোচবিহারে সংগঠন তৈরির কাজ শুরু করেছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম)।
দলীয় সূত্রের খবর, কোচবিহার দক্ষিণ, সিতাই, শীতলখুচি এবং নাটাবাড়ি— ওই চারটি আসনের মধ্যে প্রথম তিনটি তৃণমূলের ‘সুরক্ষিত’ আসন হিসেবে এখনও ভোটের অঙ্ক কষা হয়। তার মধ্যে এ বারের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে সিতাই, শীতলখুচিতে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে অল্প ভোটে পিছিয়ে ছিল। আর নাটাবাড়ি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বিধানসভা এলাকা। সেখানে বহু ভোটে তৃণমূল পিছিয়ে থাকলেও বিধানসভায় লড়াইয়ের সম্ভাবনা রয়েছে বলেই মনে করছে তারা। এই অবস্থায় ‘মিম’ ভিতরে ভিতরে কাজ শুরু করায় উদ্বেগ তৈরি হয়েছে রাজ্যের শাসক দলের মধ্যে।
মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতি। নাটাবাড়ির এই বিধায়ক বলেন, “লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচন এক নয়। মানুষ আমাদের সঙ্গেই আছেন, তা আবার প্রমাণিত হবে। ‘মিম’ যে বিজেপি’র এজেন্ট তা সবাই বুঝে গিয়েছে। তাই লাভ কিছু হবে না।’’ বিহার বিধানসভার নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, বিহার-বঙ্গ ঘেঁষা জেলাগুলিতে মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কে ভাগ বসিয়েছে ‘মিম’। সেখানে পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল। তার পরেই নতুন করে উত্তরবঙ্গ তথা কোচবিহারের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় সংগঠন তৈরির কাজে নেমে পরে ‘মিম’।
দলের কোচবিহার জেলার কর্মকর্তাদের একজন সৌকত মোল্লা বলেন, “ওই চারটি বিধানসভায় একুশে লড়ার সম্ভাবনা আমাদের রয়েছে। এই বিষয়ে অবশ্য শেষ সিদ্ধান্ত নেবেন সুপ্রিমো। তাঁর কথা মেনেই চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হবে।” এ ছাড়া তিনি জানান, শীঘ্রই তাঁরা কর্মসূচিও জানিয়ে দেবেন।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলার ৯টি আসনের মধ্যে ৮টি দখল করে তৃণমূল। এ বারের লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে কোচবিহারের ৭টি বিধানসভাতেই বিজেপির ভোটের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। একমাত্র সিতাই ও শীতলখুচিতে শাসক দল তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই অবস্থায় জেলায় নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে সংখ্যালঘু ভোটের দিকেই তাকিয়ে তৃণমূল। দল মনে করছে, সংখ্যালঘুদের ভোট পুরোপুরি পাওয়া গেলে বিধানসভায় একাধিক আসনে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হবে। এই অবস্থায় ‘মিম’ ময়দানে নেমে পড়ায় অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। ‘মিম’ নেতা-কর্মীদের অনেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁরাই মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ তুলছেন। শাসক দল দশ বছরে সংখ্যালঘুদের জন্য তৃণমূল কী করছে সে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখতে সবাইকেই একজোট হতে হবে। তাই মিমের প্রচারে লাভ নেই।”