কী ফসল চাষ করলে সাফল্য আসবে। প্রতীকী চিত্র।
আবহাওয়ার সঙ্গে তাল মিলিয়ে কোন চাষ করলে বাড়বে কৃষকদের আয়, তা নিয়েই আলোচনায় বসলেন দেশ-বিদেশের ৩০ জন কৃষি বিজ্ঞানী। রবিবার কোচবিহার শহরের একটি হোটেল ওই বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়। চার দিন ধরে ওই আলোচনা চলবে। তার মধ্যে দু’দিন আলোচনা হবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কক্ষে। পাঁচ বছর ধরে গবেষণার পরে একটি ‘পলিসি ডকুমেন্ট’ তৈরি করা হবে। যেখানে উল্লেখ থাকবে, কোন আবহাওয়ায়, কতটুকু জমিতে, কী ফসল চাষ করলে সাফল্য আসবে। ফসলের বৈচিত্র্যও তুলে ধরা হবে। সেই নথি তুলে দেওয়া হবে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ সরকারের হাতে। আলোচনায় যোগ দেওয়াউত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ‘‘এই আলোচনার মুখ্য উদ্দেশ্য ছোট ও মাঝারি কৃষকদের জন্য আবহাওয়া সহনশীল চাষবাস। সেই সঙ্গেই কৃষি বিষয়ক ছাগল পালন, মাছ চাষ, ফুল, মধু উৎপাদন ইত্যাদি বিষয়ে সুসংহত পদ্ধতি অবলম্বন করে কৃষকদের আয় বাড়ানো।’’
উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘অস্ট্রেলিয়ান সেন্টার ফর ইন্টার ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’-এর আর্থিক সহযোগিতায় উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ‘রূপান্তর’ প্রকল্প। এই প্রকল্পে অস্ট্রেলিয়া ছাড়াও ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যুক্ত রয়েছে। এই তিন দেশই কৃষি প্রধান। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে একই পদ্ধতিতে চাষবাস হয়ে আসছে। তাতে কৃষকেরা লাভের মুখ তেমন ভাবে দেখছেন না। লাভ হলেও আর্থিক স্বচ্ছলতা দেখতে পাচ্ছেন না। সেই সঙ্গে এই অঞ্চলের আবহাওয়ারও অনেক পরিবর্তন হচ্ছে। সে সব কথা মাথায় রেখেই শুরু হয়েছে প্রকল্প। অল্প জমিতে কী ভাবে চাষ করে আয় বাড়ানো যায় সেই লক্ষ্যেই করা হচ্ছে কাজ। ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে ওই কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা ওই বিষয় নিয়ে গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবেন। এর পরেই তাঁরা সিদ্ধান্তে আসবেন। অবশ্য ওই সময়ের পরেও যদি কাজ শেষ না হয় তা হলে সময় আরও বাড়বে। ওই আলোচনা চক্রে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিজ্ঞানীরা যোগ দেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশ থেকে ৬ জন, নেপাল থেকে ৫ জন এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ৩ জন কৃষি বিজ্ঞানী ওই আলোচনা চক্রে যোগ দেন।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই কোচবিহার, বাংলাদেশের রংপুর এবং নেপালের প্রভিনসে সমীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে। সেখানে প্রকল্পের প্রধানঅস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ট্যামারা জ্যাকসন এবং উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অধিকর্তা অশোক চৌধুরী উপস্থিত রয়েছেন। ওই প্রকল্পে দ্রুত সাফল্য মিলবে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। কোচবিহারে ওই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে সাতমাইল সতীশ ফার্মাস ক্লাব। ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, ‘‘এই সময়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা চলছে। আমরা মনে করি ওই গবেষণা শেষ হলে কৃষকদের অনেক উন্নতি হবে।’’