বিক্ষোভ: পুলিশের সঙ্গে বিতর্কে পুরপ্রধান। নিজস্ব চিত্র।
ছুটি না পেয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের আন্দোলনের জেরে টিকাকরণ বন্ধ হলে বিক্ষোভ শুরু হয় জনতার। রবিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি থানার রসিদপুর গ্রামীণ হাসপাতালের ঘটনা। রাতভর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরেও এ দিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত টিকা না পেয়ে ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখান শতাধিক মানুষ। উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বুনিয়াদপুরের পুরপ্রধান। অবরোধ তুলতে গেলে বংশীহারি থানার আইসি মনোজিৎ সরকারের সঙ্গে আবার বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। সব মিলিয়ে টিকা না-পাওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
জেলার ভারপ্রাপ্ত সিএমওএইচ ওঙ্কারনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ ছুটি না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়ায় সমস্যা হয়। পরে ব্লক মেডিক্যাল অফিসারের হস্তক্ষেপে সমস্যা মেটে।’’
গত ছ’মাস ধরে বারবার আবেদন করেও ছুটি পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনা আবহে টানা টিকাকরণের কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাঁদের। জাতীয় ছুটির দিন এবং রবিবার ছুটির আবেদন জানিয়ে ব্লক, মহকুমা এবং জেলাস্তরে বারবার আবেদন করেও কোন লাভ না হয়নি বলে অভিযোগ। ফলে এ দিন টিকাকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে আন্দোলনে সামিল হন বুনিয়াদপুরে অবস্থিত রসিদুপুর গ্রামীণ হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্য দিকে, রাতভর লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পরে দুপুর ১২টা নাগাদ গ্রামীণ হাসপাতালের টিকাকেন্দ্র থেকে প্রাপকদের জানানো হয়, টিকা দেওয়া হবে না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন অপেক্ষারত শ’পাঁচেক মানুষ। অবরোধের ফলে বালুরঘাট-মালদহ ও বালুরঘাট-রায়গঞ্জ রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। উত্তেজিত জনতা এক পরিবহণ কর্মীকে মারধর করেন বলে অভিযোগ।
সে সময় অবরোধ তুলে গেলে জনতার পক্ষ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিতর্কে জড়ান তৃণমূলের পুরপ্রধান অখিল বর্মণ। বাসিন্দাদের হেনস্থার বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতরের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। পুরপ্রধান অভিযোগ করেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের তুঘলকি আচরণে এ দিন বংশীহারি ব্লকের সমস্ত টিকাকেন্দ্র বন্ধ থাকায় মানুষকে চরম ভোগান্তি পড়তে হয়। আগে থেকে টিকাকেন্দ্র বন্ধ থাকার কথা জানানো হলে মানুষের হয়রানি হত না।’’
পরিস্থিতি সামাল দিতে ওই হাসপাতালে পৌঁছলে বিএমওএইচ পুলকেশ সাহা স্বাস্থ্যকর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত দু’জন সুপারভাইজ়ারকে নিয়ে বিএমওএইচ নিজেই টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করলে উত্তেজনা কমে।