বিক্ষোভ রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে। —ফাইল চিত্র।
রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপককুমার রায়ের সঙ্গে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের বিরোধ ক্রমশ বাড়ছে। উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিজেপি দলের হয়ে কাজ করা, বেআইনি ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট কমিটি ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তুলে একাধিক দাবিতে শুক্রবার দুপুরে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করে স্মারকলিপি জমা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে বেআইনি ভাবে আন্দোলনের অভিযোগে এ দিন উপাচার্য রেজিস্ট্রারকে আন্দোলনকারী শিক্ষাকর্মীদের কারণ দর্শানোর (শো-কজ়) নির্দেশ দেন। রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। তিনি কাজে যোগ দিলে তাঁর কাছে আন্দোলনকারীদের দাবিপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে।” উপাচার্য দীপকের দাবি, শিক্ষাকর্মীরা তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলতেই পারেন। তিনি সরকারি নির্দেশ ও নিয়ম মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেন। শিক্ষাকর্মীদের সমস্ত দাবি খতিয়ে দেখা হবে।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে উপাচার্যের ঘরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীরা। একই সময়ে, 'স্টেট এডেড কলেজ টিচার্স' (স্যাক্ট) আইনে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার দাবিতে অবস্থান-বিক্ষোভে শামিল হন অতিথি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। জোড়া বিক্ষোভে মঙ্গলবার রাত পৌনে ২টো পর্যন্ত উপাচার্য নিজের ঘরে আটকে পড়ে অসুস্থ হন। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে ঘেরাওমুক্ত করে। বেআইনি ভাবে আন্দোলনের অভিযোগে বৃহস্পতিবার ২০ জন অতিথি শিক্ষক-শিক্ষিকাকে শো-কজ় করেন রেজিস্ট্রার।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মী সংগঠনের নেতা তথা রায়গঞ্জ শহর তৃণমূলের সহ সভাপতি তপন নাগ দাবি করেছেন, “উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে বিজেপির হয়ে কাজ করবেন ও বিজেপিপন্থী শিক্ষকদের বিভিন্ন সরকারি দায়িত্ব দেবেন, এটা আমরা মানব না। এরই প্রতিবাদে ও শিক্ষাকর্মীদের আর্থিক সুবিধা দেওয়া-সহ একাধিক দাবিতে আমাদের আন্দোলনের গতি আরও বাড়বে।” অন্য দিকে, এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি শিক্ষক ও শিক্ষিকাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠক করার কথা থাকলেও ওই বৈঠক বাতিল করেন দেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তার দাবি, “বৃহস্পতিবার কলকাতায় রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বৈঠক হয়েছে। ওই বৈঠকে আগামী মে মাস থেকে অতিথি শিক্ষক ও শিক্ষিকারা ‘স্যাক্ট’ আইনে বর্ধিত বেতন পাবেন বলে দফতরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।”