দূষিত বাতাস থেকে চোখ বাঁচাবেন কী ভাবে? প্রতীকী ছবি।
শীতের শুষ্কতা আর দূষণ— এই দুই-ই ভোগায় সবচেয়ে বেশি। শীত পড়তে শুরু করলেই বাতাসে দূষিত কণার পরিমাণ বেড়ে যায়। জাঁকিয়ে বসে নানা অসুখবিসুখ। দিল্লি শুধু নয়, এই সময়টাতে সার্বিক ভাবেই বাতাসের গুণগত মান অনেক নেমে যায়। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণার গড় পরিমাণ (পিএম ২.৫)-এর মাত্রা এতটাই বেড়ে যায় যে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে শরীরে। শ্বাসজনিত সমস্যা, সর্দিকাশি, হাঁপানি এমনকি চোখের সমস্যাও বাড়ে এই সময়টাতে। বাইরে বেশি ক্ষণ থাকলেই চোখে জ্বালা হয়, অনবরত চোখ দিয়ে জল পড়ে। অনেকের আবার কনজাঙ্কটিভাইটিসের সমস্যাও দেখা দেয়।
ভাসমান ধূলিকণা (পিএম১০) ও অতিসূক্ষ্ম ধূলিকণা (পিএম ২.৫)-ই শুধু নয়, যানবাহনের ধোঁয়ায় নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইডের মাত্রাও বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। ওই ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কণাগুলি খুব সহজে মিশে যেতে পারে বাতাসে। বাতাসের ধূলিকণাকে আশ্রয় করে এগুলিই দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। এই দূষিত বায়ু চোখের ম্যাকুলার জন্য খুবই ক্ষতিকর। যদি এই ম্যাকুলা বা রেটিনার কেন্দ্রে অবস্থিত বিন্দুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তা হলেই ঝাপসা হতে থাকে দৃষ্টি।
দূষিত বাতাস থেকে চোখ বাঁচাবেন কী উপায়ে?
১) দূষণের জেরে চোখ শুষ্ক হয়ে যায়, তাতে আরও সমস্যা বাড়ে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আই ড্রপ ব্যবহার করুন। ঘন ঘন চোখে আঙুল দিয়ে ঘষাঘষি করবেন না। এতে চোখ আরও শুষ্ক হয়ে যায়।
২) দিনের বেলা বাইরে বেরোলে সানগ্লাস অবশ্যই পরতে হবে। দূষণ যেখানে বেশি সেখানে আইশিল্ড ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভাল হয়।
৩) চোখ জ্বালা করলে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। বাড়ি ফিরে ভাল করে ঠান্ডা জলে চোখ ধুতে হবে। এতে চোখে ঢুকে থাকা ধুলোময়লা বেরিয়ে যাবে।
৪)শরীর আর্দ্র রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে জল খেতে হবে। শীতকালেও দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া জরুরি।
৫) রোজ এমন খাবার খান যাতে বেশি মাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে। সবুজ শাকসব্জি, বাদাম, মাছ, গাজর, বেরি জাতীয় ফল রাখতে হবে ডায়েটে। ভিটামিন সি আছে এমন ফল বেশি করে খেতে হবে। এই ভিটামিন রক্তচলাচলের ক্ষেত্রে জরুরি। চোখে রক্ত চলাচল ভাল হলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কমে। চোখের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতে ভিটামিন সি অপরিহার্য।
৬) চোখে কোনও রকম সংক্রমণ হলে ফেলে রাখবেন না। চোখ লাল হলে, ফুলে গেলে, চুলকানি হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
৭) নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করাতে হবে। চোখের বিভিন্ন স্নায়ুগুলি এবং রেটিনা ঠিক মতো কাজ করছে কি না, তার পরীক্ষা করিয়ে নিন। চোখের পেশিগুলি ঠিক মতো কাজ করছে কি না সেই পরীক্ষাও করিয়ে নেওয়া ভাল।