উদ্ধার অস্ত্র। নিজস্ব চিত্র
মালদহে এ বছরের জানুয়ারি থেকে মে মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত মোট ৪৯টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে ইংরেজবাজার থানায় ১৭টি, বৈষ্ণবনগর থানায় ১২টি, কালিয়াচক থানায় ৬টি এবং অন্য থানায় একটি-দু’টি করে ৪৯টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এগুলি সবই হাতে তৈরি ওয়ান শটার পিস্তল। এর মধ্যে গত ৯ তারিখই এক সঙ্গে ৮টি ওয়ান শটার পিস্তল উদ্ধার হয় ইংরেজবাজারের কোতোয়ালি টিপাজানি এলাকা থেকে। বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবারি সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় দীপঙ্কর স্বর্ণকার নামে কালিয়াচকের এক বাসিন্দাকে।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বিহারের মুঙ্গের থেকে কারিগর এনে কালিয়াচক ১ ও ৩ ব্লকের একাধিক গোপন ডেরায় আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারবার চলছে এবং সেই আগ্নেয়াস্ত্র জেলারই বিভিন্ন এলাকায় চড়া দরে বিক্রি হচ্ছে। ধৃত দীপঙ্কর একই ভাবে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি করে কোতোয়ালিতে বিক্রির ছক কষেছিল বলে খবর। মালদহে মোজোমপুর, নারায়ণপুর, শেরশাহীর চাতরা ও সুলতানগঞ্জে। বৈষ্ণবনগর থানা এলাকার চর বাবুপুর, চর অনন্তপুর এলাকায় আমবাগানে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হয়।
এ ছাড়া বল-বোমা ও সকেট বোমাও তৈরি হয় মালদহে। বিশেষ করে বৈষ্ণবনগর থানার চর বাবুপুর, কুম্ভীরা, বীরনগর, কালিয়াচক থানার মোজমপুর, নারায়ণপুর এলাকায়। কালিয়াচকেও কিছু দিন আগে কালিয়াচক থানা বেশ কিছু বল-বোমা উদ্ধারও করে। স্থানীয় ভাবেও এখন বোমা বানাতে পারে। বোমা অবশ্য স্থানীয় কারবারিরাই তৈরি করে। এ ছাড়াও বিহার ও ঝাড়খণ্ড ঘেরা হওয়ায় ওই দুই রাজ্য থেকেও আগ্নেয়াস্ত্র ঢোকে মালদহ ও দুই দিনাজপুরে বলে দাবি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের ভিখাহার এবং রামপাড়া চেঁচড়া অঞ্চলের পাশাপাশি গঙ্গারামপুর থানার নন্দনপুর অঞ্চল লাগোয়া মালদহের নালাগোলা। কালিয়াচক, বামনগোলা, সুজাপুর হয়ে তপন ও গঙ্গারাপুরের ওই এলাকা দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ঢোকে। গঙ্গারামপুরের নন্দনপুর, বেলবাড়ি, শুকদেবপুরে বোমা তৈরি হয় বলে অভিযোগ।
রাজনৈতিক নেতারা কোনও দায় নিতে রাজি নন। বিরোধীরা দাবি করছেন, শাসক দলের জন্যই বেআইনি অস্ত্রের এত রমরমা। উল্টো দিকে, তৃণমূলের দাবি, বিরোধীরাই পায়ের তলায় মাটি নেই দেখে অস্ত্র ব্যবহার করছে। পুলিশ জানিয়েছে, অস্ত্রের খোঁজে তল্লাশি হয় নিয়মিত।