প্রতীকী ছবি।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনে প্রতিটি ওয়ার্ডেই পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। এ অবস্থায় আগামী বছর পুরসভা ভোটে জেতা নিয়ে দোলাচল ছিল দলের মধ্যেই। এমনকি অনেকে আগামী পুরবোর্ড দখল কার্যত ‘অসম্ভব’ বলেও মত প্রকাশ করেন। এ অবস্থায় কালিয়াগঞ্জে উপনির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়। এখানে প্রথম বার তৃণমূলের জয়ের সঙ্গে এটাও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, পুরএলাকায় বিজেপিকে পিছনে ফেলেছে তারা। লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের দেড় বছরের মধ্যে এই ফলাফলে তাই আশায় বুক বাঁধছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এই সাফল্যকে কাজে লাগিয়ে এ বার পুরবোর্ড দখল করতে আসরে নামছে জেলা তৃণমূল।
দল সূত্রেই খবর, উপনির্বাচনের সাফল্যের রেশ ধরে রাখতে এর মধ্যেই শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ বজায় রাখতে একাধিক কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে। বস্তুত, আগামী বছরের মে মাসে তৃণমূল পরিচালিত কালিয়াগঞ্জ পুরসভার পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হবে। তারপরই ওই পুরসভার নির্বাচন হওয়ার কথা। পুরসভা প্রতিষ্ঠার পর একটানা ২২ বছর পুরসভার ক্ষমতা নিজেদের দখলে রেখেছিল কংগ্রেস। ২০১৫ সালে পুরসভার শেষ নির্বাচন হয়। তাতেও ১৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টিই দখল করে কংগ্রেস। একটি করে ওয়ার্ড পায় সিপিএম ও বিজেপি। ২০১৬ সালের জুলাইতে বিজেপির একমাত্র কাউন্সিলর এবং কংগ্রেসের সংখ্যাগরিষ্ঠ কাউন্সিলরেরা তৃণমূলে যোগ দেন। পুরসভার দখল নেয় তৃণমূল।
পুরপ্রধান তথা কালিয়াগঞ্জ শহর তৃণমূল সভাপতি কার্তিকচন্দ্র পালের বক্তব্য, ‘‘গত বছর লোকসভা নির্বাচনে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে তৃণমূল বিজেপির থেকে অনেক পিছিয়ে ছিল। কিন্তু তবু দেড় বছরে শহরের প্রতিটি ওয়ার্ডে সার্বিক উন্নয়ন হয়েছে। তাই উপনির্বাচনে পুর বাসিন্দারা তৃণমূলের উপরে ভরসা রেখেছেন।’’ তিনি জানান, দলীয় কাউন্সিলর ও নেতারা বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে পুরসভার মাধ্যমে এলাকার সমস্যা সমাধানে কাজ করবেন।
গত বছর লোকসভা নির্বাচনে কালিয়াগঞ্জ শহরের ১৭টি ওয়ার্ড মিলিয়ে বিজেপি তৃণমূলের থেকে সাড়ে ১৫ হাজারেরও বেশি ভোট পায়। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের বিশ্লেষণ, উপনির্বাচনে শহরের ১৭টির মধ্যে ১১টি ওয়ার্ডেই বিজেপির থেকে এগিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। সব মিলিয়ে পুর এলাকায় বিজেপির থেকে তৃণমূল এগিয়ে রয়েছে ১২১৪টি ভোটে। তবে শহরের ৩, ৪, ৫, ৬, ১০ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে নিজেদের জায়গা ধরে রাখতে সক্ষম হয় বিজেপি।
বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি নির্মল দাম এ নিয়ে বলেন, ‘‘কেন পুরএলাকায় দল পিছিয়ে পড়ল, তা জানতে দলে পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী বছর পুরসভা নির্বাচনের আগে কালিয়াগঞ্জ শহরে দলকে শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।’’