ভরা স্টেশনে নেই মাস্ক। নিজস্ব চিত্র
করোনা-আবহে নেই চেনা ব্যস্ততা। নিঝুম মালদহ টাউন স্টেশনের এক থেকে সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম। স্পেশাল কিছু ট্রেনে নিস্তব্ধতা ভাঙছে স্টেশনে। কিন্তু অভিযোগ, স্পেশাল ট্রেনে আরএসি টিকিটেও যাতায়াত চলছে। নেই সামাজিক দূরত্ব। করোনা পরিস্থিতিতে স্টেশনে প্রবেশের মুখেই স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে যাত্রীদের। তবে স্টেশনের ভেতরেই উধাও সামাজিক দূরত্ব। কারও মাস্ক ঝুলছে থুতনিতে, কারও মুখে মাস্কই নেই।
শিয়ালদহ-নিউ আলিপুরদুয়ার স্পেশাল ট্রেনের এক টিকিট পরীক্ষক বলেন, “করোনা-আবহে আসন সংরক্ষিত না হলে স্টেশনে প্রবেশ করা যাবে না বলে নিয়ম চালু হয়েছিল। মাস খানেক সেই নিয়ম ছিল। এখন টিকিট আরএসি থাকলেও স্পেশাল ট্রেনে যাতায়াত হচ্ছে।” আর এক আসনে দু’জন থাকলে সামাজিক দূরত্ব? তিনি বলেন, “রেল টিকিট দিচ্ছে। আর যাত্রীরাও টিকিট নিচ্ছেন।” কোচবিহারের বাসিন্দা মোসারফ হোসেন বলেন, “নিউ-আলিপুরদুয়ারগামী স্পেশাল ট্রেনের কামরায় উঠে দেখি আমার আসনেই আরও এক যাত্রী বসে রয়েছেন। অচেনা মানুষের সঙ্গে একসঙ্গে বসেই গন্তব্যে পৌঁছতে হয়েছে।”
পূর্ব-রেলের মালদহ ডিভিশনের মধ্যে ব্যস্ততম স্টেশন মালদহ টাউন। এই স্টেশনের উপর দিয়েই চলাচল করতে ৩৩ জোড়া মেল এবং এক্সপ্রেস ট্রেন। একাধিক প্যাসেঞ্জার ট্রেন চলাচল করত। দৈনিক স্টেশন ব্যবহার করতেন হাজার হাজার যাত্রী। করোনা-আবহে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। মাস খানেক শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন চলেছে। যাত্রীদের জন্য স্টেশনে এঁকে দেওয়া হয়েছিল গোল্লাছুট। এখন দু’টি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করছে মালদহ টাউন স্টেশন দিয়ে। নিউ আলিপুরদুয়ার-শিয়ালদহ এবং ব্যাঙ্গালুরু-গুহাটি এক্সপ্রেস ট্রেন। শতাধিক যাত্রী এখন দৈনিক স্টেশন ব্যবহার করছে বলে দাবি রেল কর্তৃপক্ষের।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ টাউন স্টেশনে প্রবেশের জন্য মাত্র একটি গেট খোলা রয়েছে। সেই গেটে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাত্রীদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। আর স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতেই টিকিট পরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে স্টেশনের ভিতরে কোনও নিয়মই মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। অভিযোগ, মাস্ক ছাড়াই দেদার স্টেশনে ঘুরে বেড়াচ্ছেন যাত্রীরা। দল বেঁধে একসঙ্গে বসেও রয়েছেন। অথচ, নজরদারি নেই রেল পুলিশ বা রেলওয়ে সুরক্ষা বাহিনীর। দীপান্বিতা সরকার, কমল দাসরা বলেন, “রেলের বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো। স্বাস্থ্য বিধির বালাই নেই।” মালদহের ডিআরএম যতীন্দ্র কুমার বলেন, “স্টেশনের ভেতরে নজরদারি চালানো হবে। যাত্রীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পরেই স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।”